🔴 পাবলিক ইউনিভার্সিটি গুলোর মধ্যে National University(জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়) এবং Open University(উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়) গুলোর কথা বাদ দিলে দেখা যায় অন্যান্য পাবলিক ইউনিভার্সিটির শিক্ষকরা খুবই কমিটেড , এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কেবল সরকারের বাজেটের আশায় বসে থাকে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা নানান উপায়ে গ্রান্ট সংগ্রহ করেন, এলামনাইরা সহযোগিতা করে, বিশ্ববিদ্যালয় তার নানান রিসোর্স ভাড়া দেয়। অনেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন/চার বছরে সরকারের অনুদান কমতে কমতে মাত্র ১০% এর মতোতে এসে ঠেকেছে, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় খুব ভালোমতোই চলছে। কারণ শিক্ষকরা কমিটেড আর কর্মক্ষেত্রে আস্থাভাজন।
➡ (উদাহরণস্বরুপ- চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইভিনিং এমবিএ এর কথা বলি; BBA Department এর শিক্ষকরা সম্মিলিত ভাবে উদ্যোগ নিলেন এই প্রগ্রাম চালু করার উনারা খুলশি BGMEA ভবনে প্রতিমাসে ১৬ লাখ টাকা ভাড়া+ অন্যান্য ইউটিলিটিস খরচে ব্যায় করে থাকেন ইভিনিং প্রগ্রাম এর একটা ক্রেডিট কোর্সের(১৫/১৬ টা ক্লাস) শিক্ষক কে কোর্স শেষ করার জন্য দেয়া হয় কোর্স শেষে ১ লাখ টাকা আর আফটারনুন(business graduate) প্রগ্রাম এর একটা ক্রেডিট কোর্সের জন্য দেয়া হয় একজন শিক্ষককে ৯৬,০০০ টাকা। তারপর সেমিস্টার শেষে যা লাভ হয় তার ২০% পার্সেন্ট তারা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে দেয় তাহলে চিন্তা করেন এখানে তারা কত কোটি টাকা লাভ করেন যার ফলে প্রায় লাখ টাকার বেতন পান এবং প্রতিমাসে এত পরিমাণ ভাড়া এবং ইউটিলিটিস খরচ দেয়া সত্ত্বেও‼‼ এগুলো ভাই হুদাই বকছি না আমার কথাগুলো বিবিএ ফ্যাকাল্টির চেয়ারম্যানের কাছে গিয়ে জাস্ট মিলিয়ে নিবেন ঠিক কিনা)
☍ বিজ্ঞানের বিষয়গুলো বাদ দিলাম, কলা/মানবিক বিষয়গুলোতে গবেষণায় এতো বাজেট লাগে না, কিন্তু কোন গবেষণা প্রতিফলন কি দেখা যাচ্ছে? দুর্নীতি, সুশাসনের অভাবজনিত উন্নয়নশীল দেশের সরকারের যা দায়, তা মেনেই বলছি, আমরা অন্যরা কি আমাদের অবস্থান থেকে দায়িত্বপালন করছি?
✔ অাগামী অর্থ বছরে বাংলাদেশের ৪৬টা পাবলিক ভার্সিটির জন্য মোট বাজেট প্রস্তাব করা হইছে সাড়ে অাট হাজার কোটি টাকা। টাকার অংকটা অনেক হলেও কিন্তু এই সারে আট হাজার কোটি টাকা যখন ৪৬ টা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়কে ভাগ বাটোয়ারা করে দেয়া হলে প্রতিটা ইউনিভার্সিটি খুবই ক্ষুদ্র অংশ পাবে গবেষণা এবং কোয়ালিটি এডুকেশন এর জন্য।
👽 এটা অনেকটা Eye wash ছাড়া আর কিছুই না। দেশে গাদায় গাদায় পাবলিক ইউনিভার্সিটি তৈরী না করে যেসব পাবলিক ইউনিভার্সিটি আছে সেগুলোকে নতুনভাবে গুছিয়ে নিয়ে কাজ করলে দেশের শিক্ষা ব্যাবস্থার কোয়ালিটি অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে।
⁉ এখন অনেকে প্রশ্ন রাখবে এত গুলো স্টুডেন্ট কে কিভাবে সামলাবে যদিনা নতুন ইউনভার্সিটির অনুমোদন না দেয়?
🔰 আমার উত্তর হলো এত গুলো ইউনভার্সিটি না করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে প্রায় ৩,০০০ হাজারের কাছাকাছি কলেজ গুলোকে কাজে লাগানো উচিত। দেশে বিভিন্ন প্রফেশনাল কোর্সের উপর স্পেশালাইজড অসংখ্য কলেজ আছে এছাড়া এর মধ্যে অনেক কলেজ এত বেশী পুরাতন ও ঐতিহ্য সমৃদ্ধ যে তাদের কলেজ ক্যাম্পাস অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বড় এবং স্টুডেন্ট ও তাদের চেয়ে বেশী ; সেসব কলেজ গুলো কে ঢেলে সাজাতে পারে সরকার।
এখন পাবলিকে পড়া অনেকে বলবে এসব স্টুডেন্ট তো MCQ তে পাশ করে টিকেনি 🙄। আমার মতে এসব প্রশ্ন কে তুরি মেরে উরিয়ে দিয়া উচিত একদমি পাত্তা দেয়া উচিত না।
সত্যি কথা বলতে জীবনে সফল হতে আপনি কোন লেভেলের স্টুডেন্ট আর কোন প্রতিষ্ঠানে পড়েছেন সেটার উপর নির্ভর করেনা!!
💢 আরেকটা ব্যাপার উল্লেখ করি গাদায় গাদায় ইউনিভার্সিটি তৈরীর পিছনে একটা সিন্ডিকেট অবশ্যই কাজ করছে; আপনি যদি যেসব ইউনিভার্সিটিগুলো বিভিন্ন জেলায় বা বিভাগে হচ্ছে সেগুলোর তলায় যদি হাত দেন তাহলে সব ফকফকা হয়ে যাবে। উদাহরণ স্বরুপ বলি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এর ম্যানেজমেন্ট ডিপার্টমেন্ট নিয়ন্ত্রন করে কিছু বছর আগে চট্টগ্রাম বিভাগে তৈরী হওয়া রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের যিনি দায়িত্বে আছে উনি হচ্ছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এর ম্যানেজমেন্টের ডিপার্টমেন্ট হেড এর কাছের স্টুডেন্ট এবং এইজন্য উনাকে তেমন কোনো হাই শিক্ষা প্রফাইল মেইনটেইন করতে হয়নি শুধুমাত্র লিংক দিয়েই আজ উনি ওইখানে। এরকম চট্টগ্রামের অন্যান্য নতুন ভাবে গড়ে উঠা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় গুলো ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এর নিয়ন্ত্রণাধীন।
ঠিক একইভাবে প্রতিটা বিভাগের পুরাতন নামকরা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় গুলো নতুন নতুন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় গুলোকে নিয়ন্ত্রণ করছে। প্রতিটা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সিন্ডিকেটে পাবলিকের শিক্ষকদের সরব পদচারণা।
মানে হচ্ছে এখানে শিক্ষাখাতেও বিশাল মাফিয়া সিন্ডিকেট কাজ করছে শিক্ষাখাত নিয়ন্ত্রণের।
🙏 এছাড়া জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন অনেক অসংখ্য কলেজ আছে যাদের একটা নিজস্ব ক্যাম্পাস নাই একটা ল্যাব নাই বিলিভ ইট অর নট।
এমন কলেজ আছে যাদের পারম্যানেন্ট ভালো টিচার নাই পড়াচ্ছে সিনিয়র ব্যাচের পাশ করা স্টুডেন্ট দিয়ে নাই ক্যাম্পাস লাইব্রেরিতে নস্ট কম্পিউটারের অসংখ্য সমাহার; একটাতেও আজ পর্যন্ত কেউ কাজ করতে পারেনি। অথচ ওই কলেজের প্রিন্সিপাল আরেকটা প্রফেশনাল কলেজের ৬৫% শেয়ার প্রায় অর্ধকোটি টাকা দিয়ে কিনে নিয়েছেন ‼ কেন রে ভাই শেয়ার কেনাটা বেশী জরুরি নাকি একটা ভালো স্থায়ী ক্যাম্পাস থাকাটা জরুরি, আপনি এই টাকা কলেজের ফান্ডে রেখে তো পারম্যানেন্ট শিক্ষক রাখতে পারেন।
যে কলেজের নাম বলেছি পোস্ট পরে অনেকেই ইতিমধ্যে জেনে গিয়েছেন থাক আর কিছু বললাম না ‼
💢 জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকারী কলেজের বিসিএস ক্যাডার শিক্ষকদের অন্যান্য পাবলিক ইউনিভার্সিটির শিক্ষকদের মতো প্রতি বছর রিসার্চ আর্টিক্যাল পাবলিশে মনোযোগ দেয়া জরুরী।
সারাবিশ্বের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যাংকিং করা হয় অনেকগুলো মানদন্ডের উপর তারমধ্যে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর র্যাংকিং কিসের উপর দেয়া হয় সেগুলো যদি নেটে ঘেটে দেখেন তাহলে দেখবেন উনারা র্যাংকিং পাচ্ছে শুধু শিক্ষকদের বেশী বেশী রিসার্চ আর্টিকেল পাবলিশের কারণে।
আমাদের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের যতগুলো সরকারি কলেজে বিসিএস ক্যাডার শিক্ষক আছেন তাদের সবাই যদি প্রতি ৬ মাস অন্তর একটা করে রিসার্চ আর্টিক্যাল পাবলিশ করেন তাহলে দেখবেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাংকিং ও খুব দ্রুতই উপরের দিকে উঠবে যদিও দেশের নামকরা কিছু পাবলিক ইউনিভার্সিটির জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাংকিং নিয়ে চুলকানি খাইজ্জানি শুরু হয়ে যাবে!!! আমি চাই চুলকাক বেশি চুলকানি হোক(হয়তো উনাদের এসবে এলার্জি আছে একটু উপরে থাকতে না পারলে ) !!
আপনারা অনেকেই হয়তো জানেন না জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও কিছু সময়ের জন্য বাংলাদেশের সকল ইউনিভার্সিটির র্যাংকিং এ ৫মে অবস্থান করেছিলো। ২৯ শে জুলাই ২০১৮ তারিখে আমি নিজেই পোস্ট করেছিলাম অথচ বাংলাদেশের একটা কাকপক্ষী এমনকি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা স্টুডেন্ট ও র্যাংকিং নিয়ে একটা স্ট্যাটাস পর্যন্ত দেয়নি ‼ পরবর্তীতে আমি যখন BCS-জাতীয় গ্রুপে পোস্ট করলাম(তখন এই গ্রুপের মডারেটর ছিলাম পরে অব্যাহতি নেই) এছাড়া আমাদের পেজে পোস্ট করলাম তখন দেখলাম জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক পেজ গ্রুপের এডমিন পোস্ট দিলেন তাও গুটিকয়েক। অনেকেতো জ্ঞান স্বল্পতা হেতু র্যাংকিং কি? ভুয়া ফাউ বলে ঝেরে গেলেন ‼
অথচ অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের একটু র্যাংকিং উঠতে পারলে সেটা নিয়ে উনারা ক্যাম্পাসে উৎসবের আয়োজন করে তাদের স্টুডেন্ট রা যেসব পত্রিকায় কাজ করে তারা নিজ পত্রিকায় সেখবর ছাপায়,তাদের ইউনিভার্সিটির পেজ গ্রুপ গুলোতে ঢাক ঢোল পিটিয়ে প্রচার করে ।
➡ উদাহরণস্বরুপ বলি ২০১৮ সালেই চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় একবার এরকম বাংলাদেশের সকল ইউনিভার্সিটির মধ্যে প্রায় উপরে অবস্থান করেছিলো তখন বিবিএ ফ্যাকাল্টির চেয়ারম্যানরা তো ক্যাম্পাসে বিশাল আয়োজন করেছিল। তখন EMBA তে আমাদের ক্লাস নিতেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের/East delta University সিনেট সিন্ডিকেটের সদস্য এবং CU এর Banking & Insurance এর চেয়ারম্যান প্রফেসর ডক্টর সুলতান স্যার উনিতো আমাদের ক্যাম্পাসে গিয়ে সেই প্রগ্রামে গিয়ে অনুষ্ঠানে অংশ নিতেও বলেছিলেন ;সো চিন্তা করেন উনারা আর আমাদের মধ্যে পার্থক্য কোথায়।
অন্যান্য পাবলিক ইউনিভার্সিটির স্টুডেন্ট গুলো তো পারেনা নিজেদের ব্যাবহার্য আন্ডারগার্মেন্টস এও তাদের ভার্সিটির Logo সিল মারতে ‼(ভাগ্যিস এগুলো পরে বাংলাদেশে পাবলিকলি চলা ফেরা করা যায়না /শো অফ করা যায়না তানাহলে ওইটাতেও সিল সপ্পর বসাতো) ওদের প্রত্যেকটা পোষাকে নিজেদের বিশ্ববিদ্যালয়ের Logo প্রিন্ট করার জন্য তাদের শিক্ষকরা অনুপ্রেরণা দেয় এবং পোষাকে Logo প্রিন্ট করার জন্য তাদের ক্যাম্পাসে একটা নিজস্ব অফিস ও খুলে রেখেছে আইডি কার্ড জমা দিয়ে সেসব সিল সপ্পর লাগাতে হয়ে ।
মানে সবকিছুই পাবলিসিটি আর এডভার্টাইজিং ; আর আমরা এসব লোক দেখানো পাবলিসিটি দেখে ভর্তি হতে না পারার জন্য আফসোস করি মনে হয় যেন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে না পারলে উনি সারাজীবন ভিক্ষা করে খাবেন এমন অবস্থা!
এখন অনেকে বলবে ভাই র্যাংকিং দিয়ে কি করবো যদি শিক্ষাব্যাবস্থা কোয়ালিটীফুল নাহয়। হ্যাঁ আমিও আপনার সাথে একমত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যখন র্যাংকিং এ দুই হাজারের মধ্যে ও আসতে পারেনি তখন পেপার পত্রিকায়, নিউজে, টিভি টকশো তে পর্যন্ত অনেক মাতামাতি ছিলো তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনেকেই বলেছিলেন যারা র্যাংকিং করেন তারা নাকি ৪৫,০০০ ইউরো/পাউন্ড চেয়েছিলেন ; তা দিতে না পারায় র্যাংকিং এ আসেনাই!!
যেই বিশ্ববিদ্যালয় দুইহাজার র্যাংকিং এও ছিলো না সেটা কিনা কিছু মাসের ব্যাবধানে ৪০০ নম্বরে! চলে আসলো ; তাহলে কি তারা এই কয়েক মাসে গবেষণা করে উল্টিয়ে ফেলেছেন নাকি প্রতিমাসে তাদের শিক্ষকরা ১০-১২ টা করে রিসার্চ আর্টিক্যাল পয়দা করেছেন নাকি পাউন্ড/ইউরোর খেলা ছিলো প্রশ্ন থেকে যায়❓
আর যারা বিশ্ববিদ্যালয় র্যাংকিং করেন তারা যা তথ্য উপাত্ত নেন সে সব কিছুই অনলাইনে ম্যাগাজিন, জার্নালে, রিসার্চ আর্টিকেল বেজড; উনারা ফিজিক্যালি এসব ডাটা/উপাত্ত নেন না।
তো আপনিই চিন্তা করেন র্যাংকিং জাস্ট হলো একটা টিভি বিজ্ঞাপনের মতো অনেকটা⁉
0 মন্তব্যসমূহ