Hot Posts

6/recent/ticker-posts

CA(Chartered Accountants) সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন ......


২০১১ সালের শুরুতে বিবিএ কোর্সের ইন্টার্নশীপ প্রোগ্রামের জন্য একটা অডিট ফার্মে জয়েন করি। এই ফার্মে জয়েন করার মূল লক্ষ্য ছিল যে পরে সিএ পড়বো। আজকে সেই সিএ পড়ার জন্য নিয়ম কানুন নিয়েই লেখছি যাতে ভবিষ্যতে কেউ যদি এই কোর্সে আসতে চায় সে একটা গাইডলাইন পাবে।
১) ভর্তি হওয়ার যোগ্যতাঃ
২০০৭ সালের আগে গ্রাজুয়েশন করার আগে এই কোর্সে আসা যেতো না। কিন্তু ২০০৭ সালে কাউন্সিল এর সদস্যদের অনুমতিক্রমে এইচএসসি বা এ লেভেল পাশ করার পরও এই কোর্সে আসা যায়। বর্তমানে এই কোর্সে আসার জন্য নিয়ম হলঃ
ক. এইচএসসি এর স্টুডেন্ট-দের জন্যঃ
এসএসসি আর এইচএসসি মিলিয়ে ১০ এর মধ্যে ৯ পয়েন্ট থাকা লাগবে। সাধারনত বিজ্ঞান বিভাগ আর বানিজ্য বিভাগের স্টুডেন্টদেরই নেয়া হয়।
খ. এ-লেভেল এর স্টুডেন্টদের জন্যঃ
এ-লেভেল এ ২টা বি আর ১টা সি থাকতে হবে কমপক্ষে।
২) কোর্সের সময়ঃ
গ্রাজুয়েশন করে আসলে ৩ বছর এর কোর্স, রেজিস্ট্রেশন এর দিন থেকে ৩ বছর গননা করা হয়। আর যারা গ্রাজুয়েশন করে নাই তাদের জন্যঃ
ক। এইচএসসি পাশ করা স্টুডেন্টদের ক্ষেত্রে ৪ বছর
খ। এ-লেভেল এর স্টুডেন্টদের যদি ৩ টা বিষয়ে এ থাকে তাহলে তাদের জন্য ৩.৫ বছরের কোর্স। কিন্তু ৩টা না থাকলে তখন আবার ৪ বছর এর কোর্স করতে হবে।
৩) ভর্তি হওয়ার নিয়মঃ
ভর্তি হওয়ার জন্য সাধারনত কোনো অডিট ফার্মের সাথে জড়িত হতে হয়। এজন্য অবশ্য আপনাকে ভর্তি পরীক্ষা দিতে হতে পারে। যেমন, বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাঙ্কের র্যা ঙ্কিং অনুযায়ী ১ নং অডিট ফার্ম একাউন্টিং, ইংরেজী, আইএফআরএস এর প্রশ্ন করে থাকে তাদের পরীক্ষায়। আবার বাংলাদেশ এর সবচেয়ে আলোচিত ফার্ম আরআরএইচ ও তাদের পরীক্ষায় এধরনের প্রশ্নই করে থাকে। এছাড়া অন্যান্য ফার্মে প্রশ্ন হিসাবে সাধারনত ইংরেজী নিয়েই বিভিন্ন প্রশ্ন করা হয়ে থাকে। এই ভর্তি পরীক্ষায় পাশ করলে আপনাকে আবার ভাইভা দিতে হয় যেখানে মূলত আপনার সিএ পড়ার কারনই জিজ্ঞাসা করে থাকে। ভাইভায় পাশ করলেই আপনাকে অডিট ফার্মে নিয়োগ দিবে।
৪) রেজিস্ট্রেশন পাওয়ার নিয়মঃ
আপনি যখন একটি ফার্মে অংশ নিবেন তখন সাধারনত আপনাকে ট্রেইনি স্টুডেন্ট হিসাবে নিয়োগ দিয়ে থাকে। এরপর স্থান খালি হলে আপনাকে রেজিস্ট্রেশন করতে হয় একজন চার্টার্ড একাউন্টেন্ট এর সাথে কাজ করার জন্য। এই রেজিস্ট্রেষন এর গুরুত্ব হল আপনার যেদিন রেজিস্ট্রেশন হবে তার ১১ মাস এর মধ্যে আপনি কোনো পরীক্ষা দিতে পারবেন না। তাই যদি দেখা যায় যে ১০-১৫ দিনের জন্য আপনি পরীক্ষা দিতে পারছেন না, তখন উচিত হবে ম্যানেজমেন্টের সাথে কথা বলে রেজিস্ট্রেশন এগিয়ে নেয়া।
৫) পরীক্ষা পদ্ধতিঃ
বছরে দুবার পরীক্ষা হয়ঃ জুন এবং ডিসেম্বর মাসে। এই দুই মাস এ পরীক্ষা হওয়ার কারণ হল এই সময় অডিট এর কোনো কাজই থাকে না। জুন মাসের পরীক্ষা দেয়ার জন্য আপনাকে অবশ্যই আগের বছরের জুলাই মাসের আগেই রেজিস্ট্রেশন করে ফেলতে হবে। আর যদি ডিসেম্বর এর পরীক্ষা দিতে হয় তাহলে আগের বছরের ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। একবার পরীক্ষা দেয়ার পর পরের পরীক্ষা দিতে কোনো সমস্যা হবে না।
৬) পরীক্ষার ধাপঃ
সিএ তে এখন মোট তিনটা লেভেল আছে, একটি লেভেল সম্পূর্ন পাশ করে পরবর্তী লেভেল এ যেতে হয়। তবে একবার পরীক্ষা দিয়ে যদি কোনো বিষয়ে পাশ করে থাকেন তাহলে পরের বার আর সেই পরীক্ষা দিতে হয় নাঃ
ক) নলেজ লেভেলঃ
নলেজ লেভেল এ আছে মোট সাতটি বিষয়ঃ এসুরেন্স (অডিট), একাউন্টিং, বিজনেস ফাইনান্স, ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন, ট্যাক্স, বিজনেস এন্ড কমার্সিয়াল ল আর আইটি। এই লেভেল এর পরীক্ষায় সাধারন আপনার প্রাথমিক জ্ঞান এর পরীক্ষাই হয়। ট্যাক্স বাদে সব কয়টা পরীক্ষা মাত্র ১.৫ ঘন্টা এবং পরীক্ষার মান পূর্ন ১০০ মার্ক। প্রশ্ন এমন ভাবে আসে যেন পুরো সময়টাই লিখে যেতে হয়। ট্যাক্স পরীক্ষার সময় হল ৩ ঘন্টা। এই পরীক্ষায় কিছুটা সময় পাওয়া যায়, তবে এটাই চ্যালেঞ্জিং বিষয় কারন প্রতি বছরের ফিনান্স এক্টের সাথেই পাঠ্যসূচিতে পরিবর্তন আসে। এছাড়া বিভিন্ন সময়ের এসআরও গুলোও মনে রাখতে হয়। দুঃখের বিষয় হচ্ছে, আইটি সাব্জেক্টটা আসলেই খুব বাজে কারন এর সাথে আপনার আসল আইটির কোনোই সম্পর্ক নেই। আরেকটি দুঃখের কথা হচ্ছে, বিজনেস ফাইনাস হল অডিট, ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন, আইটি একাউন্টিং এর সংমিশ্রন। তবে আপনি যদি মাথা ঠান্ডা রেখে পরীক্ষা দিতে পারেন তাহলে খুব একটা কঠিন হবে না।
খ) এ্যাপ্লিকেশন লেভেলঃ
এ্যাপ্লিকেশন লেভেল এও আছে সাতটি বিষয়ঃ অডিট এন্ড এসুরেন্স, ফিনান্সিয়াল একাউন্টিং, বিজনেস স্টাডিজ, ম্যানেজমেন্ট একাউন্টিং, ট্যাক্স-২, করপোরেট ল আর আইটি এ্যাপ্লিকেশন। এই লেভেল এর পরীক্ষায় একটু জটিল প্রশ্ন আসে এবং মূলত তা আপনার একটি বিষয়ে আপনি আপনার জ্ঞান কিভাবে ব্যবহার করবেন তা দেখা হয়। এই লেভেল এর পরীক্ষায় ২.৫০ ঘন্টা সময় থাকে এবং ১০০ মার্ক উত্তর দিতে হয়। তবে মাঝে মাঝেই দেখা যায় ৪-৫ টা প্রশ্নই ১০০ মার্ক এর। অর্থাৎ প্রচুর লিখতে হয়।
গ) এডভান্স লেভেলঃ
এডভান্স লেভেল এ মোট চারটি বিষয় থাকে যার মধ্যে একটি হল কেস স্টাডিজ। কেস স্টাডিজ এর পরীক্ষা ৪ ঘন্টা হয়ে থাকে এবং প্রশ্ন হয় প্রায় ১০-২০ পাতার মত।
৭) কোচিং ক্লাসঃ
আপনি যখন প্রথমবার কোনো লেভেল এর পরীক্ষা দিবেন তার আগে আপনাকে অবশ্যই কোচিং ক্লাস করতে হয়। এই কোচিং ক্লাস প্রায় ৩ মাস ধরে চলে। বিরক্তের বিষয় হচ্ছে, এই কোচিং ক্লাস হয় অফিসের পর অর্থাৎ ৬-৯ টা এবং শুক্র শনিবারও ক্লাস হয়ে থাকে।
৮) অডিট কর্মঃ
আপনি যখন ফার্মের সাথে যোগ দিলেন তখন আপনাকে বিভিন্ন কোম্পানির কাজ নিরীক্ষা করতে পাঠানো হবে। এই নিরীক্ষা কর্মে আপনাকে সাহায্য করার জন্য অনেক সিনিয়র স্টুডেন্ট তো থাকবেই সাথে পাশ করে যাওয়া চার্টার্ড একাউন্টেন্টরাও থাকবে। তাই এই কাজ আসলে তেমন কঠিন না। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই আপনাকে বলে দেয়া হবে কি করতে হবে।
৯) কোর্সের ফিঃ
আপনাকে রেজিস্ট্রেশন করার সময় ৩০,০০০ টাকা দিতে হবে। এই ফি এর মধ্যে আপনার প্রথম লেভেল এর বই আছে এবং কোচিং ক্লাস এর ফিও আছে। এরপর যখন পরীক্ষা দিবেন তখন পরীক্ষার ফি হিসাবে প্রতি বিষয়ের জন্য ১,৩০০ টাকা দেয়া লাগে। কিন্তু আপনি যদি ৭টা বিষয়ই দেন তাহলে ৮,৫০০ টাকা হয় মোট ফি। এরপর যখন নলেজ লেভেল পাশ করে এ্যাপ্লিকেশন লেভেল এ যাবেন তখন ১৫,০০০ টাকা দিয়ে কোচিং ক্লাস এর জন্য রেজিস্ট্রেশন করতে হবে, আর বই কিনতে হবে ৪,৫০০ টাকা দিয়ে। আবার পরীক্ষা দেয়ার জন্য প্রতি বিষয়ে ৩,০০০ টাকা ফি দিতে হবে। আবারও আপনি যদি এক সাথে সব বিষয়ের পরীক্ষা দেন তাহলে ১৮,০০০ টাকা দিলেই হবে। এডভান্স লেভেল এর জন্যও ক্লাশ ফি ১৮,০০০ টাকা আর প্রতি বিষয়ের জন্য পরীক্ষা ফি ৫,০০০ টাকা। তবে সর্বমোট ১০,০০০ টাকা।
১০) পারিতোষিকঃ
সাধারনত আপনি যে ফার্মে কাজ করে থাকেন তারা আপনাকে হাত খরচ হিসাবে সামান্য পারিতোষিক দেয়া হয়ে থাকে। আইসিএবির নিয়ম অনুযায়ীঃ
ক) রেজিস্ট্রেশনের পর থেকে ১ বছর পর্যন্ত ৩,০০০ টাকা/প্রতি মাস
খ) রেজিস্ট্রেশনের ১ বছর পর থেকে ২ বছর পর্যন্ত ৩,৫০০ টাকা/প্রতি মাস
গ) রেজিস্ট্রেশনের ২ বছর পর থেকে ৩ বছর পর্যন্ত ৪,০০০ টাকা/প্রতি মাস
ঘ) রেজিস্ট্রেশনের ৩ বছর পর থেকে ৪,৫০০ টাকা/প্রতি মাস
১১) সামান্য হিসাবঃ
আপনি আপনার পুরো কোর্সের মধ্যে পাবেনঃ ৩,০০০*১২+৩,৫০০*১২+৪,০০০*১২= ১২৬,০০০ টাকা
আর আপনি যদি প্রতি দুবার পরীক্ষা দিয়ে দুটি লেভেল পাশ করেন তাহলে খরচ হবেঃ
৩০,০০০+৮,৫০০+৮,৫০০+১৫,০০০+১৮,০০০+১৮,০০০= ৯৮,০০০ টাকা
অর্থাৎ আপনার ২৮,০০০ টাকা সঞ্চয় হবে। আর ২টা লেভেল পাশ করার পরই এখন বেশ ভালো চাকুরি পাওয়া যায়।
১২) বোনাসঃ
আপনি অডিট করার জন্য অনেক জায়গায় ঘুরতে যেতে পারবেন, যেমন সিলেট, চিটাগাং, কক্সবাজার, রাঙামাটি এবং অন্যান্য এবং তাও আবার অফিসের খরচে।
মন্তব্যঃ-
>> পাশ করা অনেক কঠিন বলে অনেকেই করতে চায় না। যেমন গতবার প্রথম লেভেল পাশ করেছিল ৪০২ জন, কিন্তু এদের মধ্যে ২ জন বোধহয় দ্বিতীয় লেভেল একেবারে পাশ করতে পেরেছে। এবার আর গত বার মিলে প্রথম লেভেল পাশ করেছে প্রায় ৬৫০ কিন্তু দ্বিতীয় লেভেল পাশ করেছে ৬০ জনও না। এথেকেই বোঝা যায় যে দ্বিতীয় লেভেলটা অনেক কঠিন।
বেতনের কথা বললে আমি বলবো যে, অবশ্যই এই ক্ষেত্রে অনেক বেশি বেতন পাবেন আপনি যদি পাশ করতে পারেন এবং এই পাশের ফল আপনার কর্মে প্রতিফলিত হয়। একজন কোয়ালিফাইড চার্টার্ড একাউন্টেন্ট এর প্রাথমিক বেতন কম করে হলেও ১ থেকে ১.২০ লাখ এর মধ্যে।
মোদ্দা কথা, ধৈর্য এই ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ক্ষমতা। এটা না থাকলে আসলে পড়ে লাভ নেই। কারন পাশ করা না করা খুব কম সময়ই আপনার ভালো পরীক্ষার উপর নির্ভর করে।
>> আচ্ছা ভাই আমার একটি তথ্য দরকার সেটি হলো সিএ এর পাশাপাশি মাষ্টার্স পড়তে কি কোন নিষেধাজ্ঞা আছে নাকি?
- নিষেধাজ্ঞা যা আছে তা শুধু কাগজে কলমে। তাছাড়া তা আপনি কোন ফার্মে আছেন তার উপরও নির্ভর করে। ফার্ম যদি আপনাকে অনুমতি দেয় পরীক্ষা দেয়ার জন্য তাহলেই আপনি পরীক্ষা দিতে পারবেন (এটা আবার লিখিত পাওয়া যাবে না কারন এটা যে নিয়ম বহির্ভূত)।
>> সিএ করা নাকি অনেক ধৈর্যের ও পরিশ্রমের।
- হ, আমি দুই বছর করে খ্যান্ত দিসি
>> আমি ঠিক করতে পারছি না CA, CFA, ACCA কোনটা কে বেছে নিবো ।
- গ্লোবাল রেকগনাইজড ডিগ্রি হচ্ছে সিএফএ আর এসিসিএ। এর মধ্যে সিএফএ কে ধরা হয় পোস্ট গ্রাজুয়েট ডিগ্রি হিসাবে আর এসিসিএ কে ধরা হয় ডিপ্লোমা ডিগ্রি হিসাবে। অর্থাৎ সিএফএ এর মান এসিসিএ এর মান এর তুলনায় অনেক বেশি। এজন্য পরীক্ষাও সিএফএর টা কঠিন হয়ে থাকে।
লোকাল চিন্তা করলে সিএ সবচেয়ে বেশি রেকগনাইজড। একজন সিএ পাশ করা মানুষের স্টার্টিং বেতন কম করে হলে ৩০-৪০ হাজার টাকা বেশি হবে সিএফএ বা এসিসিএ এর তুলনায় বাংলাদেশ এ (যদি তাদের ভাইভা একই রকম হয়ে থাকে তাহলে)। আরেকটা কথা হচ্ছে সিএ পড়তে আপনার খরচ সবচেয়ে কম হবে। ওদের একটা লাইব্রেরি আছে কাওরান বাজার এ, যেখানে আপনি সমমনা অনেক মানুষ পাবেন। কিন্তু অন্যদের ক্ষেত্রে এমন কোনো লাইব্রেরি নাই বললেই চলে।
পরীক্ষার দিক থেকে সিএ এর প্রশ্ন সিএফএর থেকে কঠিন না হলেও, খাতা দেখা অনেক কঠিন করে করা হয়। ফলে পাশ সিএফএর চেয়ে কম করে
সিএর নেগেটিভ সাইড বলতে গেলে বলতে হয় ৩ বছর একটা ফার্মের সাথে হাতখরচ এ থাকাটা। মাত্র মাসিক ৩,০০০ দিয়ে কি কিছু হয়?? অন্য দুটির ক্ষেত্রে আপনি পরীক্ষা পাস করার পর চাকুরী করতে পারবেন এবং সেক্ষেত্রে মাইনেও বেশি হবে।
- চাকুরী করার তাড়া না থাকলে সিএ করতে পারেন।
- শেষ কথা, আপনার যদি চাকুরিতে যাওয়ার জন্য তাড়াহুড়া থাকে (যেমন, গার্লফ্রেন্ড বিয়ের জন্য চাপ দিবে) তাহলে বলবো এসিসিএ করুন। ওটার পাশের হার বেশি। বিদেশ যাওয়ার ইচ্ছা থাকলে করুন সিএফএ। আর দেশ এ থাকতে চাইলে এবং বেশি টাকা কামাতে চাইলে করুন সিএ।
>> আর একটা কথা পরিষ্কার করে এখনই বলা দরকার। আপনার যদি অপরিসীম ধৈর্য্য এবং রোবটের মত পরিশ্রম করার মত মানসিকতা না থাকে তবে এই কোর্স আপনার জন্য নয়। সেনাবাহিনীতে যেমন দুই দল সেনা থাকে, সাধারণ সৈনিক আর বিশেষ কমান্ডো দল, এই কোর্স হচ্ছে অ্যাকাউন্টিংয়ের কমান্ডো কোর্স। ( একটু অপ্রাসঙ্গিকভাবে বলে রাখি প্রতিরক্ষা বাহিনীতে একটা প্রচলিত প্রবাদ "গায়ে ব্যাঙের ছাতা না গজানো পর্যন্ত কমান্ডো হওয়া যায় না।" ) এইখানে যদি আপনি জানকয়লা করা পরিশ্রম না করেন তাহলে ভর্তি হয়ে শুধু শুধু সময় আর পয়সা নষ্ট করাই সার হবে। কাজের কাজ কিছুই হবে না।
এই হাড়ভাঙা পরিশ্রমের কথাটা সাধারণত টিউশন প্রোভাইডাররা একটু চেপে যায় কারণ এতে তারা নতুন স্টুডেন্ট ভর্তি না হয়ে ভেগে যাবার আশংকা করে। কিন্তু পরে দেখা যায় একটু আরামপ্রিয় স্টুডেন্টদের মাথায় বাজ পড়ে। তারও উপর তারা দেখে একই সাথে প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির বন্ধুরা কত আনন্দ করে আর তাকে কি গাধার মত খাটতে হয়! এটা মানসিক অস্থিরতা সৃষ্টি করে, তার কাছে এই কোর্স জেলখানার মত মনে হতে থাকে। ফলশ্রুতিতে এক-দেড় বছর সময় এবং পয়সা নষ্ট করার পর তারা ঝরে পড়ে। অতএব, সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে ভাল করে ভেবে দেখুন এত কষ্ট আপনার দ্বারা সহ্য হবে কিনা।
>> এইযে পত্রিকাতে মাঝে মাঝে বড় বড় কোম্পানীর এ্যানুয়াল ব্যালেন্স শিট ছাপা হয়, হয়তো খেয়াল করেছেন। শুধু মাত্র CA-রাই এইটির খসড়া ব্যালেন্স শিটকে চেক করে 'মোটামুটি ঠিক আছে' বলে এপ্রুভ করতে পারবে বাংলাদেশে। ACCA রা খুব সম্ভবত শুধু চাকরী করতে পারবে বাংলাদেশে!!
বাংলাদেশে বর্তমানে ফলাফলের উপর ভিত্তি করে CA পড়ুয়াদের জন্য ১৫-২০ টি স্কলারশিপের ব্যবস্হা আছে এবং মেয়েদের জন্য সবচেয়ে সুবিধার কথা হল তাদেরকে সাধারনত ঢাকার বাইরে পাঠানো হয় না
>> বাংলাদেশের ICAB - Institute of Charted Accountant Bangladesh যে সার্টিফিকেট দিয়ে থাকে সেটা বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং সেই সাথে অল্প কিছু দেশে স্বীকৃত। আর ACCA যে সার্টিফিকেট দেয় সেটা ৬টি মহাদেশের বড় বড় সব কয়টা দেশে স্বীকৃত।
>> বাংলাদেশে চার্টার্ড একাউন্টেন্টের দাম ACCA পাস করাদের থেকে অনেক বেশি।
আর বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে CA আর ACCA একটা পার্থক্য জানেন?
- CA রা এক্সটার্নাল অডিট করতে পারে কিন্তু ACCA, Cost Accountant রা তা করতে পারে না।
বিস্তারিত এখানে- http://www.icab.org.bd/

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

11 মন্তব্যসমূহ

  1. অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া,কোর্সটি সম্পর্কে এতো সুন্দর করে বুজিয়ে দেওয়ার জন্য,আশা করি আর এই আর্টিকেল পড়লে সবাই কোর্সটি সম্পর্কে কিছুই আর অজানা থাকবে না

    উত্তরমুছুন
  2. অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া,কোর্সটি সম্পর্কে এতো সুন্দর করে বুজিয়ে দেওয়ার জন্য,আশা করি আর এই আর্টিকেল পড়লে সবাই কোর্সটি সম্পর্কে কিছুই আর অজানা থাকবে না

    উত্তরমুছুন
  3. ভাই সি এ করার জন্য কি কোনো বয়স সীমা আছে?

    উত্তরমুছুন
  4. অনেক সুন্দর করে গুছিয়ে বলেছেন।
    শুভ কামনা রইলো ভাই🥰।

    উত্তরমুছুন
  5. CA কি বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পড়া যায়? যদি পড়া যায় তাহলে কিভাবে একটু জানাবেন প্লিজ......

    উত্তরমুছুন
  6. অনার্স যেকোন সাবজেক্ট থেকে করা থাকলে কি CA করা যাবে?

    উত্তরমুছুন
  7. না, বিঙ্গান ও বাণিজ্য থেকে পারবে।

    উত্তরমুছুন
  8. এম বি এ শেষ করার পর কি সি এ পড়া যায়

    উত্তরমুছুন