Hot Posts

6/recent/ticker-posts

প্রেজেন্টেশন, ইন্টার্নশিপ, ভাইভা(VIVA) তে ছেলেদের ফরমাল পোশাক ও তার খুঁটিনাটি


আপানারা যারা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেশনাল কোর্স সমূহে পড়ছেন তাদের সবারই বাধ্যতামূলক প্রেজেন্টেশন কোর্স অথবা ইন্টার্নশিপ অথবা ভাইভা(VIVA) এর সম্মুখীন হতে হয় । সেক্ষেত্রে অনেকেই হটাত করে ফরমাল পোশাক পড়া নিয়ে বিব্রত বোধ করে । কোন রঙের প্যান্ট এর সাথে কোন রঙের শার্ট পরবো ? বেল্ট ও জুতার রঙ কেমন হবে ? আমার সবকিছু সঠিক ভাবে গোছাল হয়েছে কিনা ? অনেকে আবার সবকিছু করার পর ও ফরমাল পোশাক পরা নিয়ে দ্বিধা দ্বন্দ্বে ভুগেন ? এইসব দ্বিধা দ্বন্দ্ব দূর করার জন্য আপনাদের ফরমাল পোশাক ও তার খুঁটিনাটি নিয়ে বিস্তারিত বর্ণনা করবো ।
প্রেজেন্টশনে ফরমাল পোশাক ও তার খুঁটিনাটিঃ
(১) Don’t Judge a Book by it’s cover
(২) আগে দর্শনধারী, পরে গুণ বিচারী
প্রিয় পাঠক, পুরোপুরি বিপরীত বার্তাবাহী এই দুটি উক্তি হয়তো আমরা প্রত্যেকেই শুনেছি এবং জীবনে একবার হলেও নিজেকে জিজ্ঞেস করেছি- কোনটিকে সঠিক বলে গণ্য করব?
আসলে সঠিক-বেঠিকের মাপকাঠিতে এই দুইটিকে ফেলা অন্যায় হবে কেননা পরিস্থিতি ভেদে দুটির তাৎপর্য দুরকম। আর তাই, কোনটি কোথায় প্রযোজ্য হবে, তা বলে দিবে আপনার আপনার জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা।
প্রিয় পাঠক, এই লেখার বিষয়বস্তুর (ফরমাল পোশাক) সাথে কেন এই দুটি কথার প্রসঙ্গ এনেছি, তা বুঝাতে হলে আপনাদেরকে আমার বলতে হবে First Impression এর কথা।
বিভিন্ন গবেষণার ফলাফল ঘাঁটলে জানা যায় যে, প্রথম দেখার ৩০ সেকেন্ডের মাঝেই মানুষ পরস্পরকে বিচার-পরখ করে ফেলে এবং মনে বুনে যায় এই First Impression, যা চিরস্থায়ী হয়ে থাকে। মানতে কষ্ট হলেও সত্যি যে, কথার মাধ্যমে আপনার ব্যক্তিত্ব প্রকাশ করার পূর্বেই মানুষ আপনার পোশাক দেখেই আপনার ব্যক্তিত্ব যাচাই করে নেয়। আর তা যখন হয় ফরমাল কোন প্রেজেন্টেশন বা ইন্টার্ভিউয়ের প্রসঙ্গে, তখন মানুষ পোশাক দেখে আরও বেশি বাছ-বিচার করে।
২০১০ সালে পেন্সিলভেনিয়ার ইয়র্ক কলেজের Center for Professional Excellence কর্তৃক পরিচালিত একটি গবেষণার ফলাফল হতে জানা যায় যে, সঠিক পোশাক পরিচ্ছদ প্রফেসনালিজমের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। তবে কি আমাদের সত্যিই এটা নিয়ে সামান্য মাথা ঘামানো উচিত নয়?
এই সঠিক পোশাক পরিচ্ছদ তাহলে কোনগুলো? স্যুট-টাই? ঠিক তা না। সব সময় হয়তো স্যুট-টাই পড়তে হয় না। অন্য পোশাকেও থাকা যায় যেমন যেকোনো রুচিশীল শার্ট/টি-শার্ট এবং জিন্স/প্যান্ট। কিন্তু, ক্ষেত্র বিশেষে আমাদের ফরমাল পোশাকে থাকতেই হয়। যেমনঃ চাকুরির ইন্টার্ভিউ, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেজেন্টেশন, কম্পিটিশনের প্রেজেন্টেশন, কোন অনুষ্ঠানে উপস্থাপনায়, অফিসের বিশেষ কোন ক্লায়েন্টের সাথে মিটিংয়ে ইত্যাদি ক্ষেত্রে আমাদের একদম খাঁটি ফরমাল লুকেই উপস্থিত হতে হয়। যাকে আমরা ইংরেজিতে বলি Suited booted!
এসব ক্ষেত্রে ফরমাল পোশাকে আপনাকে অধিক নির্ভরযোগ্য ও প্রফেশনাল দেখায়। এর একটি ইতিবাচক প্রভাব পড়ে আপনার বিপরীতের মানুষটির মনের উপর।তাছাড়াও, আপনার উপর তার first impression টাও প্রভাবিত হয়।
তাই এবার বলতেই হয় যে, অত্যন্ত ফরমাল কিছু প্রেজেন্টেশনের মত বিষয়গুলোতে পরের উক্তিটিই প্রযোজ্য। অর্থাৎ, আগে দর্শনদারী, এরপর গুণ বিচারী!
চলুন তবে ঝটপট দেখি ফেলি এই বিশেষ ক্ষেত্রগুলোর জন্য মানানসই ফরমাল পোশাক পরিধানের প্রাথমিক কিছু নিয়মাবলী।
(বি.দ্র. এখানে উল্লিখিত প্রতিটি টিপস বিভিন্ন স্টাইল এক্সপার্টদের বলা; কোনটিই আমার নিজস্ব নয়।)
১। টাই:
১.১ দৈর্ঘ্য:
বেল্টের Buckle এর ঠিক উপর পর্যন্ত টাই এর দৈর্ঘ্য হওয়া চাই। বেল্টের অনেক উপরে, কিংবা বেল্ট ছাড়িয়ে নিচে চলে গেলেও চলবে না।

১.২ প্রস্থ:
চিকন টাই এর চেয়ে মোটা টাই তুলনামূলক বেশি ফরমাল লুক এনে দেয়। তবে চিকন মানুষদের জন্য বেশি মোটা টাই বেমানান হতে পারে। এমন ক্ষেত্রে সামান্য সরু টাই পরিধান করাই শ্রেয়। তবে এতো বেশি সরুও হওয়া উচিত নয় যে তা পার্টি টাই এর মত দেখায় ।
১.৩ রঙ:
টাই এর রঙ অবশ্যই শার্টের রঙের চেয়ে গাঢ় হতে হবে। কোনভাবেই শার্টের চেয়ে হালকা রঙের টাই পড়া উচিত নয়।
১.৪ পকেট স্কয়ার:
স্যুটের বুক পকেটের মধ্য হতে উঁকি দিয়ে থাকা রুমালের মত জিনিসটিকে পকেট স্কয়ার বলে।
অনেকেরই ধারণা যে, টাই ও পকেট স্কয়ার- এই দুইটির রঙ ও ডিজাইন একই রকম হওয়া চাই। তবে ফ্যাশন এক্সপার্টরা এটিকে সম্পূর্ণ ভুল বলে ব্যক্ত করেছেন। বরং, পকেট স্কয়ার সবসময়ই টাই হতে ভিন্ন হওয়া চাই। ন্যূনতম ম্যাচিংও কি করা যাবে না? হ্যাঁ, অবশ্যই যাবে! শুধু খেয়াল রাখতে হবে দুটোই যেন একই কাপড় হতে বানানো না হয়। অর্থাৎ, একই প্রিন্ট, একই ডিজাইনের না হয়।
প্রেজেন্টেশনের সময় পকেট স্কয়ার পরলে খেয়াল রাখতে হবে যেন তা মার্জিত রঙ ও ডিজাইনের, তথা ফরমাল ধাঁচের হয়। সাদা রঙের পকেট স্কয়ার যেকোনো টাইয়ের এর সাথেই সামঞ্জস্যপূর্ণ হয় বিধায় তা সংগ্রহে রাখতে পারলে ভালো হয়।
১.৫ টাই এর অনুষঙ্গ:
টাই এর অনুষঙ্গ হিসাবে রয়েছে টাই পিন ও টাই বার। তবে টাই পিন পরিধান না করাই ভালো। এক্ষেত্রে যেই নিয়মগুলো মানতে হবেঃ
-টাই বারের প্রস্থ হবে টাই এর প্রস্থের ৩/৪ অংশ। কোনভাবেই যেন টাই এর প্রস্থের সমান কিংবা এর চেয়ে খুব বড় বা ছোট না হয়
– শার্টের ৩ ও ৪ নম্বর বোতামের মাঝের জায়গাটিতে টাই বার পড়তে হবে। এর উপরেও না, নিচেও না। অবশ্যই টাই এর দুটি অংশই টাই বার দিয়ে লাগাতে হবে শার্টের সাথে।
– মনে রাখা জরুরিঃ আপনার টাইকে সোজা ও টানটান করে রাখার উদ্দেশ্য টাই বারের নয়। বরং, টাইটি বাতাসে হোক আর যেভাবেই হোক, যেন জায়গা থেকে সরে গিয়ে উড়ে না বেরায়, এটিই উদ্দেশ্য। অতএব, টাইটি একদম টানটান করে না ধরে, সামান্য একটু উঁচু করে ধরে এরপর বারটি লাগান, যেন টাইটি ঢেউয়ের মত কিঞ্চিৎ উঁচু হয়ে থাকে।

২। শার্ট:
শার্ট সাধারণত দুই ধরনের হয়। যথা: ক্যাজুয়াল শার্ট ও ড্রেস শার্ট।
ড্রেস শার্টকেই মূলত ফরমাল শার্ট হিসাবে ধরে নেয়া হয়। শার্ট পরিধানের ক্ষেত্রে যেসকল বিষয় খেয়াল রাখতে হবেঃ
২.১ রঙ:
ফরমাল শার্টের জন্য সাধারণত হালকা ধরনের রংই বেশি মানানসই। বেশি গাঢ় রঙের শার্টকে সাধারণত ক্যাজুয়াল শার্ট হিসাবে ধরা হয়।তবে একান্তই যদি কেউ গাঢ় রঙের শার্ট পড়ে থাকেন, খেয়াল রাখতে হবে তা যেন খুব গাম্ভীর্য প্রকাশ না করে। প্রেজেন্টেশনের সময় আপনাকে সবাই উৎফুল্লই দেখতে চায় বৈ কি!
সাদা ও হাল্কা/আকাশি নীল – এই দুটো রঙ কমবেশি যেকোনো রঙের স্যুটের সাথেই মানিয়ে যায়। তাই সবারই উচিত অন্তত এই দুটি রঙের শার্ট সংগ্রহে রাখা।
বি. দ্রঃ বিশেষজ্ঞদের মতে, কোন ব্যবসায়িক মিটিং বা প্রেজেন্টেশনে কালো রঙের শার্ট পরিধান না করাই শ্রেয়
২.২ কলার:
শার্টের কলার সাধারণত ৩ ধরনের হয়ে থাকে। যথাঃ স্প্রেড(Spread) কলার, পয়েন্ট(Point) কলার ও বাটন-ডাউন(Button-down) কলার।
স্প্রেড কলার:
সবচেয়ে ফরমাল ধরনের শার্টের কলার স্প্রেড কলার হয়ে থাকে এবং এটি টাই ছাড়া কখনোই পরিধান করা হয় না। ব্যবসায়িক মিটিং/অত্যন্ত ফরমাল কোন অনুষ্ঠানের জন্য এটি পরিধান করা শ্রেয়।
পয়েন্ট কলার:
ফরমাল বা ইনফরমাল- যেকোনো অনুষ্ঠানেই, টাই সহ বা টাই ছাড়া- যেকোনোভাবেই এই কলারের শার্ট পরা যায়।
বাটন-ডাউন কলার:
এই কলারের শার্টকে সবচেয়ে কম ফরমাল হিসাবে ধরে নেওয়া হয় এবং এর সাথে টাই পরিধান না করাই ভালো বলে বিশেষজ্ঞরা অভিমত দিয়েছেন।
অতএব, প্রেজেন্টেশন, ইন্টার্ভিউ বা মিটিংয়ে প্রথম দুই ধরনের কলারের শার্ট বেছে নেওয়াই বুঝি উত্তম!
৩। স্যুট:
৩.১ রঙ:
Navy Blue, Grey (ধূসর) ও Charcoal (কালোর কাছাকাছি একটি রঙ; সম্পূর্ণ কালো নয়) রঙের স্যুট যেকোনো প্রেজেন্টেশন ও ব্যবসায়িক মিটিংয়ের জন্য সবচেয়ে বেশি মানানসই।
বি.দ্রঃ বিশেষজ্ঞদের মতে, বিয়ের দাওয়াত, রাতের জমকালো কোন অনুষ্ঠান ও শোকের উপলক্ষ ব্যতীত কালো রঙের স্যুট পরিধান না করাই শ্রেয়। বিশেষ করে ব্যবসায়িক মিটিং ও প্রেজেন্টেশনে অবশ্যই নয়। কালো রঙটি রাতের বেলায় কিংবা ঘরের ভেতরের জাঁকজমকপূর্ণ/ কৃত্রিম আলোর নিচে যত না সুন্দর লাগে, দিনের বেলায় স্বাভাবিক আলোতে ঠিক ততটুকুই বেমানান লাগে। যদিও বিষয়টি নিয়ে কয়েকজন সামান্য বিতর্ক করেছেন, তবুও The Huffington Post ও Fashionbeans এর মত নামকরা ওয়েবসাইটগুলোতে কালোর বিপক্ষেই মতামত দেওয়া হয়েছে।
৩.২ স্যুটের বোতাম:
এটি অত্যন্ত জরুরী একটি জানার বিষয়। স্যুটের বোতাম লাগানোর ক্ষেত্রে যে নিয়ম মানতে হবেঃ
যদি ৩টি বোতাম থাকে:
উপরের বোতাম: লাগানো যেতেও পারে, নাও পারে। এটি ইচ্ছার উপর নির্ভরশীল।
মাঝের বোতাম: সবসময় লাগানো থাকতেই হবে। বাধ্যতামূলক।
নিচের বোতাম: কখনই লাগানো যাবে না। সবসময় খোলা থাকতে হবে।
যদি ২টি বোতাম থাকে:
উপরের বোতাম: সবসময় লাগানো থাকতেই হবে। বাধ্যতামূলক।
নিচের বোতাম: কখনই লাগানো যাবে না। সবসময় খোলা থাকতে হবে।
বি.দ্রঃ
বসার সময় অবশ্যই স্যুটের সবগুলো বোতাম খুলে বসতে হবে।
আপনাকে যেন ‘হেঁটে যাওয়া একটি জলজ্যান্ত কাঠের বাক্সের মত’ না দেখায়, তাই ফ্যাশন এক্সপার্টরা একদম নিচের বোতামটি লাগিয়ে রাখতে বারন করেন। অতএব পাঠক, সামনের বার খেয়াল রাখবেন কিন্তু!
৩.৩ ট্যাগ/লেবেল:
মনে আছে স্কুলের মনোগ্রামের কথা? ইউনিফর্মের সাথে এটি পড়া বাঞ্ছনীয় ছিল- স্কুলের পরিচয় তুলে ধরতে হবে যে! স্যুটের হাতায় সেলাই করে রাখা দোকানের/ব্র্যান্ডের লেবেলটিও ঠিক এই মনোগ্রামের মতই।
জুতা ও বেল্টের রঙ অবশ্যই একই হতে হবে
তবে পাঠক, স্যুটটা যে ইউনিফর্ম নয়! তাই অবশ্যই দোকান থেকে স্যুটটি নিয়ে আসার পর হাতায় সেলাই করে রাখা লেবেলটি সরিয়ে ফেলতে ভুলবেন না। এ কী? এখনও খোলেননি লেবেলটি? এবার কিন্তু আপনি সত্যিই সবাইকে হাসিয়ে ছাড়বেন!
৩.৪ হাতার দৈর্ঘ্য:
স্যুটের হাতার দৈর্ঘ্য কব্জির সামান্য উপর পর্যন্ত হবে, একদম কব্জি পর্যন্ত নয়। খেয়াল রাখতে হবে যেন স্যুটের নিচে শার্টের হাতার কিছু অংশ দেখা যায়। স্টাইলিস্টদের মতে, শার্টের ১/৪ ইঞ্চি পর্যন্ত দেখা যেতে হবে।

৪। প্যান্ট/ ট্রাউজার:
ফরমাল ড্রেস শার্টের সাথে অবশ্যই ফরমাল প্যান্ট পড়তে হবে। খেয়াল রাখা জরুরী যে, জিন্স ও গ্যাবারডিন এর প্যান্ট অবশ্যই ফরমাল নয়। স্যুটের রঙের সাথে মানানসই রঙ বেছে নিতে হবে। স্যুটের রঙেরই প্যান্ট হতে পারে; আবার এর চেয়ে ভিন্ন রঙেরও হতে পারে। তা যেন মানানসই হয়, সেটিই প্রতিপাদ্য। তবে যদি স্যুট না পরে শুধু শার্ট পরে থাকেন, তাহলে শার্টের সাথে বৈসাদৃশ্য কোন রঙ বেছে নিন।
প্যান্টের জন্য পারফেক্ট দৈর্ঘ্য কেমন হতে হবে তা ছবিতে দেখানো হল। (এখানে Traditional টাই সঠিক পরিমাপ)
৫। জুতা, মোজা ও বেল্ট:
জুতাকে আমরা অনেকেই বেশি গুরুত্ব দেই না। তবে, ইন্টার্ভিউয়ের কক্ষে প্রবেশের পর বিপরীতের মানুষটি কিন্তু সবার আগে আপনার জুতো-জোড়াই খেয়াল করেন! যেই মানুষটি রুচিশীল ও পরিষ্কার জুতা পরিধানের প্রতি খেয়াল রেখেছে, সে নিশ্চয়ই আপাদমস্তক তার পোশাক ও পরিচ্ছন্নতার প্রতিও খেয়াল রেখেছে – এমন মনোভাব অনেকেই পোষণ করেন। তাই জুতোকে কম প্রাধান্য দিলে কিন্তু চলবে না পাঠক!
এখন তবে দেখে নিন এই জুতা, মোজা ও বেল্ট নিয়ে কিছু নিয়ম।
জুতা ও বেল্টের রঙ অবশ্যই একই হতে হবে। কালো বেল্ট হলে কালো জুতা, ব্রাউন বেল্ট হলে ব্রাউন জুতা- এমনটাই হওয়া চাই।
এর পেছনে যুক্তি বুঝতে চিন্তা শক্তির সামান্য একটু সাহায্য নিন পাঠক। ধরুন, আপনার পরনে রয়েছে নীল রঙের প্যান্ট ও ব্রাউন রঙের জুতা। এমতাবস্থায় ভেবে দেখুন তো, এক জোড়া ব্রাউন মোজা পরলে কেমন দেখাবে আপনাকে? নাক কুঁচকেছেন নিশ্চয়ই?
তাই সবসময় চেষ্টা করুন প্যান্টের রঙের মত অথবা তার থেকে গাঢ় রঙের মোজা বেছে নিতে। মোজায় যদি নকশা করা থাকে তবুও চেষ্টা করতে হবে যেন মোজার বেজের রঙটি (Base Color) প্যান্টের রঙের কাছাকাছি হয়।
প্রেজেন্টেশনের পোশাকের জন্য সাধারণ ডিজাইনের বেল্টের বাকল (Buckle) শুধু ফরমাল লুকই এনে দেয় না, বরং তা সুরুচির পরিচয়ও তুলে ধরে। প্রেজেন্টেশনের জন্য সুন্দর একটি ফরমাল পোশাক পরিধান করলেন কিন্তু এমন একটি বেল্ট পরলেন যার Buckle টিতে সিংহের চেহারার আকৃতির ডিজাইন করা, তাহলে কিন্তু পুরো লুকটাই তছনছ হয়ে যায়! তাই সাবধানে বেছে নিন Belt Buckle।
অনেকেই ইদানীং লোফার (loafer) কে ফরমাল জুতা হিসেবে বিবেচনা করে থাকেন। বেশ! তবে জেনে রাখা ভালো যে, লোফার রয়েছে দুই ধরনের- একটি নরমাল চামড়া(Leather) দিয়ে তৈরি, অপরটি সুয়েড চামড়া(Suede) দিয়ে তৈরি। প্রেজেন্টেশনে যেহেতু খুব ফরমাল ধাঁচের পোশাক পরা হয়, তাই লেদারের তৈরি লোফারটি বেছে নেওয়াই শ্রেয় বলে বিশেষজ্ঞরা মতামত ব্যক্ত করেছেন।
এক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে দুটি বিষয়- মোজা ও রঙ। লোফারের সাথে মোজা পরার নিয়ম আছে নাকি নেই- তা নিয়ে অনেকেরই বিতর্ক রয়েছে।তাই এই সিদ্ধান্তটি নিজস্ব ইচ্ছা ও অভিমতের উপরেই ছেড়ে দিন।
রঙের বিষয়ে বলতে হয় যে, ফরমাল লুকের ক্ষেত্রে লোফারের রঙ গাঢ় হওয়াই মানানসই। প্রেজেন্টেশনে আপনি নিশ্চয়ই টকটকে লাল কিংবা নজরকাড়া রয়াল ব্লু রঙের লোফার পরে বিপরীতের মানুষের সকল মন ও দৃষ্টি শুধু আপনার জুতার দিকেই নিয়ে যেতে চাইবেন না!
ফরমাল পোশাকের ক্ষেত্রে এরকম ছোটখাটো নিয়মগুলো মেনে চললেই আপনি হতে পারবেন অনন্য! ভাবতে পারেন- এতসব মেনে চলে কী লাভ? বেশ পাঠক! তাহলে না হয় ভূমিকাটি আরেক দফা পড়ে ফেলুন? সুন্দর ও দামি পোশাক পড়া প্রতিপাদ্য নয়, বরং নিয়মমতো রুচিশীল ও মানানসই পোশাক বেছে নেওয়াই প্রতিপাদ্য।
এগুলোর সাথে যোগ করার মত আপনারও যদি কোন অভিমত থেকে থাকে, তবে জানিয়ে দিতে ভুলবেন না যেন!

কালেক্টেড ফ্রমঃ http://10minuteschool.com/blog

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

2 মন্তব্যসমূহ