Hot Posts

6/recent/ticker-posts

Freshers রা কোথায় জব পাবে এবং কিভাবে পাবে ?

freshers job , fresher jobs near me , jobs for graduates freshers, MTO , management trainee , probationary officer


বর্তমানে চাকুরির বাজারে অসংখ্য ফ্রেশ গ্রাজুয়েট যুক্ত হচ্ছে । এদের মধ্যে বেশীর ভাগ তরুন তরুণী ক্যারিয়ারের সঠিক গাইডলাইনের অভাবে গ্রাজুয়েশনের পরপরই জব মার্কেটে তাদের কাংখিত জব টি পাচ্ছে না । জব না পাওয়ার দরুন সবার একটাই কমপ্লেইন হচ্ছে অভিজ্ঞতা ছাড়া জব মার্কেটে জব নেই !! কথাটা আংশিক সত্য ...কারণ এত কম্পিটিশনের মধ্যে অনেক কোম্পানিই ফ্রেশ গ্রাজুয়েট নিচ্ছে । কিন্তু কিভাবে নিচ্ছে ?? সেটা হচ্ছে Management Trainee Officer (MTO) । ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনি বা ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনি অফিসার (এমটিও) হচ্ছে অনভিজ্ঞ ফ্রেশারদের জন্যে পোস্ট।

বাংলাদেশে ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনি প্রোগ্রাম মূলত ব্যাংকিং সেক্টর এবং বিদেশী MNC (multinational company) গুলো প্রথম চালু করে তবে পেপার পত্রিকায় বেশী ব্যাংকিং MTO প্রোগ্রাম টা হাইলাইট হওয়ার কারণে অনেকেই মনে করেন শুধু ব্যাংকেই MTO নেয় । এটা পুরোটায় ভূল ধারনা ।

প্রতি বছর বাংলাদেশের অসংখ্য কোম্পানি বিভিন্ন নামে Management Trainee নেয় ; যেমনঃ Nex Gen(Nestle), Future leadership program(Walton), প্রবেশনারি অফিসার , future icon, Trainee Officer, Next Business Leader(Grameenphone) ,Management Trainee Officer(MTO) ইত্যাদি নামে জব সার্কুলার করে থাকে । তবে ম্যাক্সিমাম ক্ষেত্রে MTO নামেই জব সার্কুলার করে থাকে ফ্রেশ গ্রাজুয়েট দের জন্য ।

এখন কথা হচ্ছে MTO তে ফ্রেশ গ্রাজুয়েট দের নেয় কেন ?
বর্তমানে আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে একজন শিক্ষার্থী মাস্টার্স শেষ করে ফেললেও প্র্যাক্টিকেল কাজে তেমন একটা পারদর্শী হতে পারে না। যার ফলে, সব ধরনের কোম্পানিগুলোতেই ফ্রেশারদের এখন ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। এই জন্যই বিভিন্ন কোম্পানি শিক্ষিত তরুন দেরকে সঠিক ট্রেইনিং এর মাধ্যমে নিজের কোম্পানির ভবিষ্যতের লিডার তৈরির লক্ষ্যে MTO Program চালু করে ।
MTO Program থেকেই অসংখ্য তরুন তরুণী ভবিষ্যৎ GM,DIRECTOR, EXECUTIVE DIRECTOR, Group Head ,CEO, Vice president হয়ে থাকে । এর জ্বলন্ত উদাহরণ হচ্ছে – Ranks FC properties Limited এর CEO – Tanvir Shahriar Rimon ভাই সবার পরিচিত মুখ অনলাইনে সরব ব্যাক্তিত্ব (উনিও MTO Program থেকে মাত্র দেড় থেকে দুই বছরে এই পজিশনে গিয়েছেন)।

ট্রেইনিং সময়কালঃ
ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনি বা এমটিও পদের জন্য চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হওয়ার পর প্রতিষ্ঠান ভেদে তিন মাস থেকে এক বছর তাদেরকে কোন দায়িত্ব দেয়া হয় না। এই সময় ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনিদেরকে শেখানো হয় বলে, এই সময়কে বলা হয় প্রবেশ পিরিয়ড। তাদেরকে এক্সটারনাল ও ইন্টারনাল ট্রেনিং এবং এটাচমেন্ট টু পার্টিকুলার ডিভিশন প্রদান করা হয়। এভাবে প্রবেশনাল পিরিয়ড শেষ হলে তাদেরকে বিভিন্ন বিভাগে নিযুক্ত করে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়া হয়।

শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ
প্রায় সব ধরনের কোম্পানি এবং প্রতিষ্ঠানে , ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনি বা এমটিও হিসেবে নিয়োগের ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা ডিপ্লোমা থেকে মাস্টার্স পর্যন্ত সীমাবদ্ধ। ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনি অফিসার নিয়োগের ক্ষেত্রে অনেক সময় বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক এবং প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠান কোন কোন পাবলিক ইউনিভার্সিটি বা প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবে তা উল্লেখ করে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। এর সাথে সাথে অনেক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে বলে দেয়া হয় কোন কোন সাবজেক্টের শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবে তাদের নূন্যতম কি ধরণের রেজাল্ট থাকতে হবে।

যেমন: সাধারণত বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে লেখা থাকে, এমবিএ/এমবিএম বা ব্যাংকিং, ফিন্যান্স, মার্কেটিং, ইকোনমিক্স, ইংলিশ, অ্যাকাউন্টিং, ম্যানেজমেন্ট, কম্পিউটার সায়েন্স, স্ট্যাটিসটিকস বা ম্যাথম্যাটিকসে অনার্সসহ মাস্টার্স ডিগ্রিধারীরা পদটিতে আবেদন করতে পারবেন। শিক্ষাজীবনে কমপক্ষে দুইটি বা তিনটি প্রথম শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএ থাকতে হবে। কোনও তৃতীয় বিভাগ থাকা যাবে না।

বিঃদ্রঃ ম্যাক্সিমাম কোম্পানি রেজাল্ট নিয়ে তেমন কোন রিকোয়ারমেন্ট দেয়না এবং সাবজেক্ট নিয়েও তেমন কোন কিছুই দেয়না । শুধু উল্লেখ করে Bachelor/Masters in Any Discipline. সো ভয় পাওয়ার কোন কারণ নেই ।

কি কি দক্ষতা লাগবে ?
বর্তমানে যে কোন প্রতিষ্ঠিত বা প্রতিশ্রুতিশীল প্রতিষ্ঠান ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনি বা এমটিও হিসেবে নিয়োগ দেয়ার জন্য মেধাবী, সপ্রতিভ ও উদ্যমী তরুণ-তরুণী খুঁজে। আগ্রহী প্রার্থীর জোরালো গাণিতিক দক্ষতা, যোগাযোগের সক্ষমতা, কম্পিউটারে ভালো দখল, নিষ্ঠা ইত্যাদি গুণ থাকতে হবে। এছাড়া দলবদ্ধভাবে কাজ করার যোগ্যতাও থাকতে হবে। ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনি বা এমটিও হিসেবে কাজ করতে চায়লে অবশ্যই স্বপ্রণোদিত, দায়িত্বশীল এবং লক্ষ্য ভিত্তিক হতে হবে। ইতিবাচক এবং নমনীয় মনোভাব থাকতে হবে। চাপ এবং দীর্ঘ সময়ের মধ্যে কাজ করতে সক্ষম হতে হবে। ভালো আন্তঃব্যক্তিগত দক্ষতা থাকতে হবে। রিপোর্ট লেখার উপর ভালো দক্ষতা থাকতে হবে। এর সঙ্গে সঙ্গে ইংরেজি ও বাংলায় ভালো যোগাযোগ দক্ষতা থাকতে হবে।

কোন ডিপার্টমেন্ট:
বেশিরভাগ, ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনি বা এমটিও হিসেবে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোন ডিপার্টমেন্টে নেয়া হবে ব হতে পারে এমনটা উল্লেখ করা হয় না। কিন্তু ইন্টার্ভিউ এর সময় ক্যান্ডিডেটের কাছে থেকে জিজ্ঞেস করে নেয়া হয় সে কোন ডিপার্টমেন্টে কাজ করতে আগ্রহী, অথবা এই মুহূর্তে এই এই ডিপার্টমেন্ট পজিশন ফাঁকা আছে ক্যান্ডিডেট কাজ করতে আগ্রহী কি না? কিছু কিছু সময় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়ে থাকে কোন ডিপার্টমেন্টের জন্য নেয়া হচ্ছে।

বেতন কাঠামো:
ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনি বা এমটিও’র নির্দিষ্ট কোনো বেতন কাঠামো নেই। তবে সাধারণত, শুরুতে বেতন ধরা হয় সর্বনিম্ন ১০ থেকে ১৮ হাজার টাকা(ব্যাংকে MTO দের বেতন ৪৫ থেকে ৬৫ হাজার টাকা)। এ সাথে কখনও কখনও কিছু প্রতিষ্ঠান ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনিদের ফ্রি লঞ্চ, মোবাইল ফোন বিল, প্রভিডেন্ট ফান্ড , ইন্সুরেন্স , গ্রাচুইটি, পারফরম্যান্স বোনাস ,Overtime Allowance, পরিবহন সুবিধা (যদি না থাকে সেক্ষেত্রে Transportation Allowance দেয়) সুযোগ সুবিধা দিয়ে থাকে। প্রবেশ পিরিয়ড শেষ হলে ম্যানেজমেন্ট ট্রেইনি বা এমটিওকে এসিস্টেন্ট অফিসার পদে উন্নীত করা হয় এবং বেতন বাড়ানো হয়। দেড় থেকে দুই বছর লেগে থাকলে জুনিয়র এক্সিকিউটিভ পদ দেয়া হয় এবং যোগ হয় বাড়তি বেতন।

আবার অনেক কোম্পানিতে জব সার্কুলারে বলে দেয়া হয়ঃ কোম্পানিতে MTO হিসেবে জয়েনের ১ম ৬ মাস বেতন ধরা হবে ১২ হাজার এরপরের ৬ মাস পর এসিস্ট্যান্ট অফিসার হিসেবে ১৮ হাজার এবং ১ বছর পূর্ণ হলে Executive হিসেবে বেতন ২৫ হাজার টাকা । এর এক বছর সম্পূর্ণ হলে Senior Executive হিসেবে কাজের পারফরম্যান্স অনুসারে ৩০-৪০ হাজার টাকা । মোদ্দাকথা এক এক কোম্পানির স্যালারী স্ট্রাকচার এক এক রকম কেউ স্যালারি বেশী দেয় সুযোগ সুবিধা কম দেয় আর কেউ সুযোগ সুবিধা বেশী স্যালারি কিছুটা কম দেয় ।

ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্টঃ
সাধারনত ম্যানেজম্যান্ট ট্রেইনি দের সকল ডিপার্টমেন্ট এ কাজ করার সুযোগ দেয়া হয় , তাদের কে এক্সক্লুসিভ ট্রেইনিং এর উপর রাখা হয় । অনেক মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি তে বিদেশ থেকেও ট্রেইনিং করিয়ে নিয়ে আসা হয় MTO দের ।

আমার ব্যাক্তিগত উদাহরণ যদি বলি , আমি যখন MTO হিসেবে জয়েন করি তখন ১ম এক মাস ক্যারিয়ার কনসাল্টেন্ট এক্সপার্ট দের মাধ্যমে সকাল ৮ টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত সকল ডিপার্টমেন্টের প্রেক্টিক্যাল ট্রেইনিং ,এসাইনমেন্ট ,প্রেজেন্টেশন , বিভিন্ন প্রজেক্টে এ কাজ করানো হয় পাশাপাশি পড়ালেখা তো আছেই ।

এর পরের ২ মাস বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টে টিম তৈরি করে প্রোজেক্ট দিয়ে দেয়া হয় (এমনও সপ্তাহ গিয়েছে যে ১ সপ্তাহে ৭-৮ টা ডিফারেন্ট প্রোজেক্ট এ কাজ করেছি + লাঞ্চের পর ১ ঘন্টার Industrial Engineering কোর্স + অফিস শেষে প্রফেশনাল ইন্সটিটিউটে TPM,TQM,IE,LEAN কোর্স +প্রোজেক্ট প্রেজেন্টেশন টপ ম্যানেজম্যান্ট দের সামনে + Assignment + Study জীবন তামা তামা করা ৬ মাস ।

এরপর পারফরম্যান্স অনুসারে ডিপার্টমেন্ট ভাগ করে দেয়া হয় । বাকি 6-7 মাস আমেরিকান/ইউরোপিয়ান ক্লায়েন্ট AMEREX(Oshkosh Brand-USA), Comtextile (ZARA BRAND- Spain) , Garanimals (USA), Li & Fung(Centric brand/wallmart – USA) দের অর্ডার নেয়া থেকে শিপমেন্ট পর্যন্ত কাজ করেছি এরপর আমাকে কোম্পানির খরচে ফ্রান্সের Bureau Veritas (BV) থেকে Quality Engineering ট্রেইনিং দেয়া হয় ।

BV থেকে Certified হওয়ার পর বর্তমানে TARGET –USA ক্লায়েন্ট দায়িত্ব দিয়ে কোম্পানির Internal Auditor (Executive) পদ দিয়েছে । এত কিছু বলার কারণ হচ্ছে MTO Program এর গুরুত্ব বোঝানো । যদিও এক এক কোম্পানির MTO Program এক এক রকম । সব কোম্পানি আপনাকে এরকম সুবিধা নাও দিতে পারে ।

অসুবিধাঃ কোম্পানির ক্ষেত্রে MTO program এর কিছু অসুবিধা হচ্ছে অনেক ফ্রেশ গ্রাজুয়েট MTO Program থেকে Exclusive Training নিয়ে Executive হওয়ার পর পরবর্তীতে ভালো ভালো কোম্পানিতে হ্যান্ডসাম স্যালারীতে Job Switch করে (সেটা আমার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য কারণ আপনি যদি স্কিল্ড এবং অভিজ্ঞ হোন আপনাকে বিভিন্ন কোম্পানি ডাকবেই যেমন আমারও অলরেডি কোরিয়ান এবং সুউজারল্যান্ড ভিত্তিক ২ টা কোম্পানিতে জবের প্রসেসিং চলছে) । আল্টিমেটলি এতে ক্ষতি হয় কোম্পানির কিন্তু দেশের কথা চিন্তা করলে দেশ একজন দক্ষ জনবল/ফিউচার লিডার পায় ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ