প্রফেশনাল সিভি রাইটার দিয়ে সিভি লিখিয়ে নিবো নাকি সিভি নিজেই রেডি করবো !!
cv check by interviewer |
সিভি/রিজুমি লিখা নিয়ে আমাদের ফ্রেশার দের মধ্যে একটা কনফিউশন কাজ করে ......এর মূল কারণ হলো সিভি নিয়ে আমাদের পড়ালেখার পাঠ্যবইয়ে আলাদা কোন সংযোজন নেই এবং ক্লাসে শেখানো হয়না কোনটা স্মার্ট ফরম্যাট কোনটা বাংলাদেশের কর্পোরেট কালচারে বেশী গ্রহণযোগ্য এমনকি আমাদের স্কুল কলেজের শিক্ষক রা নিজেরাই জানেন না সো আর উনারা কি শেখাবেন !!!!!!
সবার কাছেই এই ব্যাপারটা খুবই একটা সাধারণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে ......আসলে এখানে বিষয়টা স্বাভাবিক ভাবে না নিয়ে কোন উপায় ও নেই কারণ আমাদের দেশের ম্যাক্সিমাম যারা কর্পোরেটে ভালো পজিশনে আছেন এবং হিউম্যান রিসোর্স এ কাজ করছেন তারা নিজেরাও কিন্তু একসময় এইসব সিভি/রিজুমি নিয়ে মাথা ঘামাতেন না উনাদের মধ্যে ম্যাক্সিমাম রেফারেন্সে জব হয়েছে(বাংলাদেশের কর্পোরেট কালচার টা এমনই এমনকি আমেরিকা ইউরোপ ও এর ব্যাতিক্রম না এটা নিয়ে অন্য কোন দিন পোস্ট দিবো) । যারা এখন এইচআর পজিশনে আছেন তাদের কাছে জবের আবেদনের জন্য মেইলে প্রতি বছর হাজার হাজার সিভি জমা হয় যার ফলে উনারা এসব নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করে একসময় এসব বিষয় সম্পর্কে যথেষ্ট দক্ষ হয়ে উঠেন ।
তবে মূল বিষয় হচ্ছে বর্তমানে এখনো এমন হাজারো কোম্পানি আছে যেখানে প্রফেশনালি সিভি রাইট করে নিয়ে দেন বা নিজে লিখে দেন এতে কোন তাদের মাথা ব্যাথা নেই উনারা শুধু ক্যারিয়ার অবজেক্টিভ আর পড়ালেখা এবং কোয়ালিফিকেশন চেক করেন আর অভিজ্ঞতা যদি থাকে ব্যাস আর রেফারেন্সের জবে অভিজ্ঞতা ক্যারিয়ার অবজেক্টিভ দেখার এত টাইম নাই সিভি দেয়াটা তখন শুধুমাত্র নিয়মের খাতিরে দিয়ে থাকেন ।
যেসব প্রতিষ্ঠানে আপনার লিখিত এবং ভাইভা এক্সাম( অনেক ক্ষেত্রে মেডিকেল টেস্ট নেয়) নিয়ে তারপর জবে রিক্রুট করে সেক্ষেত্রে সিভি তেমন একটা গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করেনা কারণ তারা ক্যান্ডিডেট এর সিভি যতই সুন্দর করে লিখুক না কেন আগে যোগ্যতা যাচাই করে তবে রিক্রুট দিবে । সিভি তাদের কাছে হচ্ছে জাস্ট একটা ইনফরমেশন ডকুমেন্টস এর মতো ।
যেমন ধরুনঃ চট্টগ্রামের কোরিয়ান ইপিজেডের মূল স্বত্বাধিকারী কোম্পানি YOUNGONE প্রতিবছর প্রায় ১০০ জনের মতো মাস্টার্স/এমবিএ পাশ করা যেকোনো বযাকগ্রাউন্ডের শিক্ষার্থী এসিস্টযান্ট অফিসার পদে অফিসিয়াল জবে নিয়োগ দেয়; তাদের প্রাথমিক আবেদন আপনি নির্ধারিত মেইলে সিভি পাঠিয়ে নাহয় উনাদের নির্ধারিত লিংকে ফরম পূরণ করে তথ্য দিয়ে আবেদন করবেন এরপর যারা আবেদন করেছে সবাইকে লিখিত পরীক্ষা এরপর ভাইভা এবং মেডিক্যাল টেস্টের পর আপনাকে উত্তীর্ণ হতে হবে সেক্ষেত্রে সিভি কোন গুরুত্ব বহন করেনা ।
তাহলে সিভি কোন ক্ষেত্রে গুরুত্ব বহন করে......???
সিভি সেই ক্ষেত্রে আপনার গুরুত্ব বহন করে যখন আপনার ৫-১০ বছরের অভিজ্ঞতা আছে , আপনার ক্যারিয়ারে আপনি বিভিন্ন অভিজ্ঞতা এবং একাডেমিক ডিগ্রী ও প্রফেশনাল ডিগ্রীর সমাহার এর পাশাপাশি উনারা যে পদে আবেদন করছেন সেই পদ গুলো তে সেলারি অনেক বেশী এবং ওইপদ গুলোতে ক্যান্ডিডেট নেয় ১-২ জন ; এইসকল পদের জন্য অনেক সময় মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি গুলো সাধারণত নরমাল জবসাইটে জবসারকুলার দেয়না উনারা দেখা যায় নামকরা জার্নাল টাইপ কিছু সাইট আছে ওইখানে দেয় যেখানে আমার আপনার মতো সাধারণ পাবলিকের ফ্রি এক্সেসের সুযোগ নাই ক্রেডিট কার্ড দিয়ে মাসিক চার্জ পে করতে হয় এছাড়া অনেক হেডহান্টার নিয়োগ দেয় বা ঐরকম হেডহান্টার এজেন্সির মাধ্যমে এরকম ক্যান্ডিডেট খুঁজে ।
এছাড়া Linkedin এ ও জব রিক্রুটার পছন্দের ক্যান্ডিডেট কে চাইলেই খুঁজে পেতে পারে জাস্ট এক ক্লিকেই অথবা জব সার্কুলার দেয়ার পর সেই জবের যে কোয়ালিফিকেশন চাওয়া হয় সেই অনুযায়ী লিংকডিনে সার্চ দিলেই রিজিয়ন অনুসারে মালিকপক্ষের চোখের সামনে মুহূর্তেই বিভিন্ন জনের প্রোফাইল শো করে (এটা যারা প্রিমিয়াম ইউজ করেন তারাই ট্রাই করতে পারবেন) তারপর আপনার প্রোফাইল ভিজিট করে জব রিক্রুটার আপনার সাথে যোগাযোগ করবে অথবা আপনি যদি লিংকডিনে এপ্লাই করেন আপনাকে একটা সময় নির্ধারণ করে দিবে কখন আপনার ভাইভা নিবে অনলাইনে নাকি ফোনে নাকি অফিসে !!!
যেমনঃ American Company Target এ আমার স্যার এর জব হয়েছিলো লিংকডিনের মাধ্যমে ; উনাকে রিক্রুটার অফার করেছিলো তখন এশিয়ার কান্ট্রি ডিরেক্ট্র র ছিলেন ইন্ডিয়ান ।
এছাড়া ফ্রেশার দের মধ্যে যারা নামকরা কোম্পানি বিদেশী কোম্পানি , মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি যেমন British American Tobacco, Unilever ইত্যাদি তে এপ্লাই করবেন তখন কিন্তু আপনাকে একটা ভালো সিভি দিতেই হবে সেক্ষেত্রে প্রফেশনাল সিভি রাইটার দিয়ে লিখিয়ে সিভিতে এপ্লাই করলে একটা ফার্স্ট ইম্প্রেশন কাজ করবে তবে যাইহোক এসব কোম্পানি তে নিয়োগে অন্তত ৩-৪ টার মতো ভাইভা ফেস করতে হয় ।
আমাদের দেশে এইচ আর রা দুইভাগে বিভক্ত একটা অংশ বলছে সিভি রাইট করে নেন প্রফেশনাল সিভি রাইটার দিয়ে আবার আরেকটা পক্ষ এর ঘোর বিরোধী ।
যারা লিখিয়ে নিচ্ছেন তারাও কিন্তু খারাপ বলছেন না কারণ অভিজ্ঞ প্রফেশনাল দের মূলত ১২-১৬ পেজের সিভি হয়ে যায় সেগুলো গুছিয়ে লেখার তাদের এত সময় নেয় এছাড়া যারা নিজে নিজে সিভি লেখায় বিশ্বাসী তারাও খারাপ কথা বলেনি কারণ উনারা চান ফ্রেশার রা যাতে নিজের হাতে সিভি লিখেন এরফলে ফ্রেশার রা নিজের সিভি সম্পর্কে ভালো ধারনা থাকার দরুন ভাইভা তে নিজের সম্পর্কে বলতে পারেন আত্মবিশ্বাস ও থাকে তাই বলে আমি কপি পেস্ট সিভির কথা বলছি না । সিভি অবশ্যই যার যার ইউনিক হবে কিন্তু ধরন ফরম্যাট একই ।
আমাদের মধ্যে অনেক ফ্রেশার আছেন যারা কিনা ছাত্রজীবনে অনেক অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেন, ক্লাব পরিচালনা ,ইভেন্ট এরেঞ্জ , বিতর্ক প্রতিযগিতা , সাংস্কৃতিক সংগঠন , মানবাধিকার কাজে যুক্ত , পার্টটাইম জব ইত্যাদিতে যুক্ত থাকেন তখন এইসব বিষয়ে সুন্দর উপাস্থাপনা টা সবার ক্ষেত্রে সম্ভব হয়ে উঠেনা ।
সেক্ষেত্রে যদি টাকা নিয়ে এত মাথা ব্যাথা না থাকে তাহলে প্রফেশনাল সিভি রাইটার দিয়ে নিজের সিভি রাইট করিয়ে নিতেই পারে এটা যার যার ব্যাক্তিগত এবং এইজন্য অনেক সময় জব রিক্রুটার র' তেমন কিছু আস্ক করে না সিভি কি নিজে লিখেছেন কিনা কারণ তার বর্ণাঢ্য ছাত্র ক্যারিয়ার এর বিবরণ দেখে রিক্রুটার সন্দেহ করেনা । আর সন্দেহ করলেই বা কি চালাক ছেলেমেয়েদের কে যেকেউ তার সিভি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে নিরদ্ধিধায় উত্তর দিতে পারবে ।
অনেক ফ্রেশার আছে ভালো ইংরেজি বলতে পারেনা , নিজের উপর আত্মবিশ্বাস কম , তারউপর সিজিপিএ নিয়ে সে খুবই বিব্রত এক্ষেত্রে দেখা যায় আপনি প্রফেশনাল সিভি রাইটার দিয়ে সিভি লিখিয়ে নিলে ধরা খাবেন মাস্ট কারণ আপনার সিভি যেরকম ওয়েল প্রেজেন্ট করা থাকে কিন্তু সেরকম আপনি ভালো প্রেজেন্টেশন এবং ভাইভা দিতে পারছেন না !!!!!!
প্রফেশনাল সিভি রাইটার দিয়ে যারা সিভি রাইট করেন তারা কিন্তু এমন না যে সিভিটা নতুন জবের জন্য রাইট করিয়ে নিচ্ছেন; এটা ভূল ধারনা অনেকেই আছে সরকারি চাকুরী করেন , বিসিএস ক্যাডার এসব ব্যাক্তিরা সিভি রাইট করে মূলত এটা জাস্ট শো কেসে সাজিয়ে রাখার জন্য কারণ উনারা কখনোই নতুন জবে এপ্লাই করেন না এছাড়া অনেক বেসরকারি কোম্পানি তে অনেক জব করেন যারা কিনা নতুন জবে যেতে আগ্রহি না কিন্তু তারপরেও সিভি রাইট করিয়ে রাখেন কারণ উনাদের টাকা নিয়ে এত মাথাব্যাথা নেই যদিও প্রফেশনাল সিভি ১৫,০০০-১৬,০০০ টাকায় ও করতে দেখেছি , আবার অনেকে আছে উদ্যোক্তা বা মালিক বা প্রাইভেট কোম্পানির ই ভালো কোন কর্তাব্যাক্তি যারা কিনা নামকরা যত সিভি রাইটার আছে উনাদের সিভি স্যাম্পল নিজের কাছে রাখেন !!! আপনি শুনলে অবাক হবেন এমন অসংখ্য কর্তাব্যাক্তি আছেন যারা কিনা নিজে নিজে একটা সিভির লাইন বা শব্দ পরিবর্তন করলেও সিভি রাইটারকে টাকা দিয়ে করান অদ্ভুত অথচ ফ্রেশার দের বোকা দেন নিজে নিজে সিভি রাইট করতে কেন পারোনা !!!!
সত্যিকথা বলতে কি ফ্রেশার দের প্রফেশনাল সিভি রাইটার দের কাছ থেকে সিভি লিখিয়ে নেয়ার কোন প্রয়োজন ই নেই কারণ যারা প্রাইভেটে জব করবেন বলে মন্সথির করেন তারা ম্যাক্সিমাম দেখা যায় পরিচিত রেফারেন্স দিয়ে , নয়তো ইন্টার্নশিপ থেকে জব পেয়ে যান যার ফলে সিভি মেইন ইস্যু না ।
বাংলাদেশের জব সাইট গুলোতেও ফ্রেশার দের আবেদনের তেমন সুযোগ ও নেই যার ৯৫% অভিজ্ঞ লোক নেয় আর বাকি ৫% ফ্রেশার নেয় তার মধ্যে অর্ধেক টেকনিক্যাল প্রেক্টিকেল পড়াশোনা করা লোক নেয় যেমন নার্সিং , শেফ , ইত্যাদি । আবার অনেকসময় রিক্রুটার জবসাইটে যেসব জবের বিজ্ঞাপন দেন ফ্রেশার দের জন্য ওইটা অনেক টা লোক দেখানো কারণ উনারা দেখা যায় নিজেদের পরিচিত লোক নিয়েছে অথচ যারা কস্ট করে আবেদন করেছে জবসাইটে তাদের সিভি দেখেও না । এখন অনেকে বলবেন ভাই তাহলে টাকা খরচ করে কেন জবের বিজ্ঞাপন দিলো আসলে ভাই উনারা যখন এরকম বিজ্ঞাপন দেয় তখন দেখা যায় এক সাথে ৫-৬ টা পদের জন্য পোস্ট দেয় যার মধ্যে ১ টা শুধু ফ্রেশার দের জন্য আর বাকি গুলো অভিজ্ঞ দের জন্য ।
ফ্রেশার দের দোষ দিয়ে লাভ নাই কারণ আমাদের দেশে সিভি রাইটিং নিয়ে পাঠ্যবইয়ে কিছু লিখা নাই যে, এই ফরমযাটে এমন এমন করে লিখবে ......অনেকে বলবে অনলাইনে তো সব পাওয়া যায় ...আমার কথা হলো অনলাইনে যেসব পাওয়া যায় সেগুলো হচ্ছে বিদেশের সিভি ফরম্যাট আমাদের দেশের ফরম্যাট নিয়ে কথা বললে অনেকে বলবে বাংলাদেশে সিভির কোন নিজস্ব ফরম্যাট নাই !!!!
তবে ফ্রেশার রা চাইলে সিভি রাইটিং নিয়ে ২০০-৩০০ টাকা খরচ করে সিভি রাইটিং নিয়ে প্রফেশনাল সিভি রাইটার এর লেখা বই কিনতে পারে যেমন আপেল মাহমুদ , নিয়াজ আহমেদ এর বই ।
এছাড়া আমি কয়েকমাস আগে কিছু প্রফেশনাল সিভি রাইটার দের বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে কিছু স্যাম্পল শেয়ার করেছিলাম যাতে অযথা ২০০০-৭,০০০ টাকা খরচ করতে না হয়; ২টা গ্রুপে পোস্ট দিয়েছিলাম প্রায় কয়েকশো শিক্ষার্থী আমার থেকে সিভির ফরম্যাট নিয়েছেন । যাইহোক সামনে হয়তো সিভি লিখা নিয়ে একটা পোস্ট দিবো ইনশাল্লাহ ।
আশাকরি আমার পোস্ট পড়ে বুঝতে পেরেছেন কারা সিভি রাইট করিয়ে নিবেন ফ্রেশার হলেও/ফ্রেশার না হলেও মূলত সিভি রাইটার রাও ইন্ডিরিকেটলি ফ্রেশার দের সিভি লিখতে বারণ করেন কারণ এগুলো শুধুমাত্র অভিজ্ঞদের জন্য যার ফলে মাত্র ২-৩ % ফ্রেশার রা সিভি রাইট করিয়ে নেন আর বাকিরা সব প্রফেশনাল ।
লিংকডিনের সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন ইউজ করে বলা যায় আমেরিকাতে ২,৪০০ সিভি রাইটার আছে ,ভারতে ৪৭৬ আর বাংলাদেশে ১৫ জন ।
নিজে নিজে সিভি রাইট করাও এত সহজ না ; যেমন ধরুনঃ সিভি রাইটার আপেল মাহমুদ প্রায় ৭৯ টা জবে নিজে লেখা সিভি পাঠিয়ে ৮০ তম জবে নিয়োগ পান এর মাঝের সময়টা উনি অনেক স্টাডি করেছেন পড়েছেন যার ফলে আজ উনি একজন প্রফেশনাল সিভি রাইটার ।
আবার অনেকেই আছে বিভিন্ন প্রোগ্রামে ফি এর বিনিময়ে এটেন্ড করেন এবং বিভিন্ন সিভি রাইটার থেকে সব ধরনের সিভির ফরম্যাট বানিয়ে নিয়ে এবং যদি এইচ আর বা জব রিক্রুট পজিশনে থাকেন সেখান থেকে হাজার হাজার সিভি নিয়ে নিজে থেকে প্রফেশনাল সিভি রাইটিং এ নাম লেখান ।
আমাদের দেশে এরকম অসংখ্য এইচ আর আছেন যাদের কিনা এইচ আর এর উপর কোন পড়াশোনা নাই নাই কোন অভিজ্ঞতা । ডিপ্লোমা করতে গেলাম কলিগ ছিলেন এশিয়ান গ্রুপের উনাকে স্যার জিজ্ঞাসা করলেন কি করেন উনি বললেন এইচআর অথচ এইচআরের কাজ তেমন কিছু পারেন না শিখছেন অথচ জবের বয়স ৭-৮ বছর ,কেমনে কি!!!!
তারপর উনি বললেন উনি আগে কোয়ালিটি ডিপার্টমেন্টে কাজ করতেন তারপর এখানে ট্রান্সফার; স্যার বললেন , এরকম বাংলাদেশের শত শত প্রতিষ্ঠান আছে। ইভেন Youngone এর মত কোম্পানি তে বাংলায় মাস্টার্স করেও এইচআর হবেন তারপর হয়তো ট্রেনিং করাবে আর ডেস্ক জবগুলো তে প্রতিদিন একই কাজ যার ফলে এসব শেখা কিছুই না এর জন্য মিনিটে ৫০ শব্দ টাইপ করা লোক লাগেনা ।
এই সব জব ফিল্ড অনুসারে পড়াশোনা নেই এইসব রিক্রুটার রা জব ফিল্ড অনুসারে পড়াশোনা আছে এমন ফ্রেহার দের নিতে চায়না কারণ উনারা নিজেদের জব চলে যাবে এই ভয় পায় ; এখন কার ফ্রেশার রা যেকোনো কাজ মাত্র ৬ মাসে রপ্ত করে ফেলে যা কিনা আগে পুরাতন একই পদে বহাল জব ফিল্ড অনুসারে পড়াশোনা নেই এমন লোকদের ৮-১০ বছর লাগে !!!
বলতে যদিও অন্যরকম লাগে কিন্তু এটাই সত্যি তাই ফ্রেশার দের প্রতি একটা সাজেশন হলো কখনোই নতুন জবে গিয়ে বেশী জানি বেশী পারি ভাব দেখাবেন না তাহলে কিন্তু আপনাকে কাজ না শেখাতে পারে আবার হিংসা করবে.........এবং বিভিন্ন নোংরা অফিস পলিটিক্সে আপনাকে জড়িয়ে ফেলবে এবং জব ও চলে যেতে পারে ; তাই যে যেই পজিশনেই হোক , পড়াশোনা বেশিদূর করুক না করুক , কাজ কম পারুক না পারুক জাস্ট চুপচাপ থাকবেন নম্র থাকবেন উনাদের সাথে মিশে যাবেন আমার স্যার তো বলতো ব্যাটা পারলে তাদের সাথে গিয়ে সিগারেট টানবি তারপরেও তোর ভিতরের অবস্থা বুঝতে দিবিনা কারণ যখন তাদের সাথে মিশে কাজ শিখে ফেলা যাবে দেখা যাবে আপনি ২-৩ বছরের মাথায় ডিপার্টমেন্ট হেড হয়ে গেছেন ।
আমার স্যার বুয়েট থেকে পাস করে গার্মেন্টস এ এন্ট্রি লেভেলে জব করেছেন ৬ মাস নাকি উনি সূর্য কে দেখেন নাই এত কাজ কারণ ভোরে অফিসে আসতেন আর বাসায় যেতে রাতে কান্না করেছেন কত কিন্তু নিজের আইডেন্টিটি লুকিয়ে রেখেছেন এর ২-৩ বছরের মাথায় উনি হেড পজিশনে চলে গিয়েছেন আজ ৯ বছরের চাকুরিতে উনার বেতন ৬ ডিজিটের বিদেশী কোম্পানি তে কর্মরত কোম্পানি উনার পরিবারের থাকা , পড়ালেখার খরচ , ট্রান্সপোর্ট এবং বিদেশ ভ্রমনের খরচ বহন করেন এছাড়া কম্পানির একটি ক্রেডিট কার্ড দিয়েছেন যেটা দিয়ে প্রতি সপ্তাহে ৫-৭ টা পেইড কোর্স করতে হয় চাইলে বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘরে বসে প্রফেশনাল ডিগ্রী এমবিএ ডিপ্লোমা করতে পারেন ।
যাইহোক অনেক কথা বললাম ......আশাকরি আপনাদের বুঝাতে পেরেছি ......।
বিঃদ্রঃ সিভি এবং রিজুমির মধ্যে পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও আমি বার বার সিভি উল্লেখ করেছি কারণ সিভি নামটা আমাদের দেশে প্রায় সবাই রিজুমির ক্ষেত্রে ও ব্যাবহার করে সেক্ষেত্রে বলেছি । সিভি -মূলত অভিজ্ঞ দের ক্ষেত্রে আর রিজুমি - মূলত ফ্রেশার দের ক্ষেত্রে ইউজ করা হয় কারণ এটা ২ পাতার আর সিভি ২ পাতা অথবা ২ এর অধিক ও হতে পারে । তবে আমাদের দেশে ২ পাতার সিভি গ্রহণযোগ্য । যদি রিক্রুটার পিডিএফ দিতে বলে পিডিএফ দিবেন আর যদি ডকফাইল বলে ডকফাইল দিবেন কিন্তু ক্লাউড ড্রাইভ থেকে লিংক শেয়ার দিবেন না । আর যদি কিছু না বলে সেক্ষেত্রে সবসময় পিডিএফ দিবেন । আরও অনেক কিছুই লিখতে পারতাম কিন্তু পোস্ট অনেক বড় হয়ে গিয়েছে তাই আর লিখা হয়নি অন্যকোন দিন নতুন কোন টপিকে আপনাদের সামনে হাজির হবো
ধন্যবাদ ।
লেখাঃ Md. Omar Faruq Shamim
0 মন্তব্যসমূহ