কাল রাতে ইনবক্সে একজন জিজ্ঞাসিকরেছেন?"
উত্তর দিলাম, "হুম"
পরের প্রশ্ন "আচ্ছা সিএ পাশ করা কি কঠিন?"
প্রশ্ন শুনে আমি থমকে গেলাম!
এর কারন আবার এই নয় যে সিএ পাশ করা অত্যন্ত সহজ অথবা অত্যন্ত কঠিন! এই প্রশ্নের উত্তর অনেকটা আমাদের মোস্তাফিজের পরবর্তী বলের মত অনিশ্চয়তাময়!
উত্তর দিলাম, "হুম"
পরের প্রশ্ন "আচ্ছা সিএ পাশ করা কি কঠিন?"
প্রশ্ন শুনে আমি থমকে গেলাম!
এর কারন আবার এই নয় যে সিএ পাশ করা অত্যন্ত সহজ অথবা অত্যন্ত কঠিন! এই প্রশ্নের উত্তর অনেকটা আমাদের মোস্তাফিজের পরবর্তী বলের মত অনিশ্চয়তাময়!
আমার পরিচিত একজন আছেন, আসেন তার গল্প বলি। ২০০৭ সালের দিকে যখন আমি ইউনিভার্সিটি কোচিং করছি, তখন ওই ব্যাচেলর ফ্ল্যাট এ থাকা এক ভাই সিএ পড়ত। প্রথম বারের মত কাউকে সিএ পড়তে শুনে আমার চোখ তখন কপালে। তার সাথে খুব একটা কথা হতোনা। কারন সে প্রায়শই অনেক রাতে বাসায় ফিরত। শুক্র-শনিবারেও তার নাগাল পাওয়া যেতোনা খুব একটা। তিনি নিয়মিত লাইব্রেরিতে ও যেতেন। কিছুদিন পর ওই বাসা ছেড়ে আসার দরুন তার সাথে আমার অনেকদিন দেখা সাক্ষাৎ হয়নি।
শেষমেষ ২০১৬ সালের শুরুর দিকে তার সাথে আমার একদিন লাইব্রেরিতে দেখা। চিনতে খুব একটা কষ্ট হয়নি। আগের মতই চিকন চাকন আছেন। আমার সিএ পাশ করার কথা শুনে অভিনন্দিত করলেন। অনেক কথা হবার পর স্বভাবতই জিজ্ঞেস করলাম, "ভাইয়া কতদুর কি করলেন"। উত্তর এলো, উনি এখনো নলেজ লেভেল (Level 1) এই আছেন, সাতটার মধ্যে দুটো বিষয় পাশ করেছেন। আমার বিঃস্ময়ের পারদ তখন আকাশ ছুঁয়েছে। সেটা অবশ্য তিনি পাশ করেননি বলে নয়, তিনি এতোদিন কিভাবে লেগে আছেন তা দেখে!
এছাড়া আমি আমার বাবার বয়সী কয়েকজনকে দেখতাম তারা নিয়মিত লাইব্রেরিতে আসতেন। তাদের প্রতি শ্রদ্ধায় আমার মাথা নুয়ে আসতো। উনাদের হার না মানা মানসিকতা দেখে আমার লজ্জাই লাগতো। কারন আমি কোনোকালেই এতোটা ধৈর্যশীল ছিলামনা।
এর বিপরীতে ও আবার অনেক গল্প আছে। আমার পরিচিত ২ জন ভাই ২.৫ বছরে সিএ পাশ করে ফেলেছে। আমার ৩ বছর এর কাছাকাছি লেগেছে। নতুন নতুন অনেকের রেজাল্ট ও মাশাআল্লাহ ভালো হচ্ছে।
পার্সোনালি আমি জানি, ওই ৩ টা বছর আমি কিভাবে পার করেছি। আমার দীর্ঘদিনকার রূমমেট হারুন চৌধুরী ও ভালো করে জানে সে আমার কি পরিমান প্যারা সহ্য করেছে। আজ একটা সিক্রেট বলি। আমার পরীক্ষার আগে আগে আমি ইচ্ছা করে ওর সাথে ঝগড়া করতাম, যাতে ওই সময়টায় ওর সাথে গল্পগুজব না করে আরেকটু পড়তে পারি। সারাদিন অফিস করে, রাত ১০টা পর্যন্ত ক্লাশ করে বাসায় ফিরে আবার পাশ করার জন্য পড়ালিখা করা ইউনিভার্সিটিতে ফাঁকিবাজি করে আসা একটা ছেলের জন্য কি পরিমান কষ্টের হতে পারে সেটা নিশ্চই অনুমিত। ফেসবুক কে সাময়িক বিদায় জানানো, দিনে ৩/৪ টি সিনেমা দেখার বদলে মাসে একটা সিনেমা দেখা, ইন্টারনেটে এডিক্টেড অবস্থা থেকে সে কানেকশন ডিসকানেক্ট করা খুব একটা সহজ ছিলোনা। তারপরও দাঁতে এ দাঁত চেপে ২.৫ বছরে পাশ করার অসম্ভব সপ্নকে বাস্তবে রুপ দিতে দিনের পর দিন অমানুষিক পরিশ্রম করেছি।
কথা হচ্ছে আপনি পাশ করছেন কি পাশ না করছেন এটা সম্পুর্ন আপনার উপরে নির্ভর করছে। উপরওয়ালা আপনাকে দুহাত ভরে দেয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন। আপনি যদি দিনে ৩ ঘন্টা ফেসবুকে, ২ ঘন্টা আড্ডা ও ৮ ঘন্টা ঘুমিয়েই পার করে দেন, আপনার তাড়তাড়ি পাশের চিন্তাটা একটু বেশি বেশিই হয়ে গেলোনা। ৩ বছরের কষ্টের বিনিময়ে আপনি যদি আপনার আজন্ম লালিত স্বাধ পুরন করে দুটো ফানুস উড়াতে পারেন, তাহলে সেটাই বা কম কিসে!
©মুহাম্মদ ফিরোজ মাহমুদ শাকিল
চার্টার্ড একাউন্ট্যান্ট
ACNABIN
ম্যানেজার, অডিট এন্ড কনসালটেন্সি।
1 মন্তব্যসমূহ
আপনার অনার্স কোন বিষয়ে?
উত্তরমুছুন